বাল্যবিবাহ থেকে পালাতে ভয়াবহ গুম নাটক!
পটুয়াখালীর কুয়াকাটার নবম শ্রেণির ছাত্রী মরিয়মকে (১৫) ঢাকার একটি পোশাক কারখানা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। মরিয়মকে হত্যার লাশ গুম করা হয়েছে অভিযোগ করে থানায় হত্যা মামলা করেছিলেন তার মা।
এ নিয়ে আজ শনিবার দুপুরে পটুয়াখালীতে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মইনুল হাসান।
মইনুল হাসান জানান, ঢাকার মুগদা থানাধীন মদিনাবাগের খালপাড় রোডের রুনা ফ্যাশন নামের একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত অবস্থায় গতকাল শুক্রবার রাতে কথিত লাশ গুমের পরিকল্পনাকারী ও আত্মগোপনকারী মরিয়মকে উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার বলেন, পরিবারের সদস্যরা ইচ্ছের বিরুদ্ধে খালাতো ভাইয়ের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার আয়োজন করায় পালানোর জন্য নিজেকে হত্যার নাটক সাজায় মরিয়ম। ঘটনার রাতে বাড়ির একটি সাদা রঙের রাজহাঁস জবাই করে তার বুকের দুই টুকরো মাংস ও রক্ত ঘরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে এবং পায়ের নূপুর ও অন্যান্য আলামত ঘরের মেঝেতে রেখে ঢাকার উদ্দেশে পালিয়ে যায় মরিয়ম। ১৯ সেপ্টেম্বর ভোররাতে সবার অজান্তে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে সে।
মইনুল হাসান জানান, ১৯ সেপ্টেম্বর সকালে কুয়াকাটার খানাবাদ কলেজ সংলগ্ন বাড়ি থেকে বেরিয়ে আলীপুরে হয়ে বাসে করে প্রথমে কলাপাড়া পৌঁছায় মরিয়ম। ওই দিন সকাল ৮টার দিকে কলাপাড়া থেকে ঢাকাগামী ঈগল পরিবহনের বাসে করে ঢাকায় গিয়ে নিজেই পোশাক কারখানায় কাজ খুঁজে নেয় সে।
উদ্ধার হওয়া মরিয়মকে আদালতে সোপর্দ করার কথা জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, মরিয়ম এতই ধূর্ত যে, কারো সহায়তা ছাড়াই এই চাঞ্চল্যকর ও দুঃসাহসিক পরিকল্পনা একাই বাস্তবায়ন করে সে।
জানা গেছে, মহিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী মরিয়ম গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতের খাবার খেয়ে মায়ের পাশে ঘুমায়। সকালে তার মা নূরজাহান বেগম না পেয়ে খুঁজতে বের হতেন। ঘরের মেঝেতে দেখতে পান ছোপ ছোপ রক্ত, পায়ের নূপুর, দুই টুকরো মাংস, রক্তমাখা দুটি ছুরি পড়ে আছে মেঝেতে। সবাই ধারণা করে, মরিয়মকে হত্যার পর তার লাশ গুম করা হয়েছে।
এ ঘটনার পরের দিন মহিপুর থানায় মরিয়মের মা একটি হত্যা মামলা করেন। চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী এ ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি সাংবাদিকরাও প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে। এর সর্বশেষ কিনারা হয় মরিয়মকে উদ্ধার এবং পুলিশ সুপারের প্রেস ব্রিফিংয়ের মধ্য দিয়ে।