পর্যটকদের পদচারণে মুখর সুন্দরবন
পর্যটকদের পদচারণে মুখর হয়ে উঠেছে সুন্দরবনের করমজলসহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় এলাকা। ঈদের দু-তিনদিন আগে থেকে সুন্দরবনে আসতে শুরু করে দেশি ও বিদেশি পর্যটকরা। ঈদের পরে এখনো আছে পর্যটকের ভিড়। বন বিভাগ জানিয়েছে, পর্যটকদের এ ভিড় দুর্গাপূজা পর্যন্ত থাকবে।
করমজল পর্যটন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রহ্লাদ চন্দ্র রায় জানান, ঈদের শুরু থেকে প্রতিদিন সহস্রাধিক পর্যটক করমজল পর্যটন কেন্দ্রে আসছেন। এ ছাড়া বনের হাড়বাড়িয়া, হিরণ পয়েন্ট, কটকা, কচিখালী, দুবলাচরসহ বিভিন্ন স্পটেও প্রচুর দর্শনার্থী ভ্রমণ করছেন। প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক দর্শনার্থীর চাপ সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে স্বল্পসংখ্যক বনের কর্মচারীকে। এরপরও পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিরলস কাজ করছেন তাঁরা। ঈদ উপলক্ষে করমজল পর্যটন কেন্দ্রের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটিও বাতিল করা হয়েছে।
দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সুন্দরবন ভ্রমণে আসা পর্যটকরা সাধারণত মংলা হয়েই বনে প্রবেশ করে থাকেন। আর মংলা থেকে সবচেয়ে কাছাকাছি দর্শনীয় স্থান হলো সুন্দরবনের করমজল। যারা অধিক ব্যয়ে বনের গহিনে যেতে পারেন না তাঁরা স্বল্প খরচেই করমজল ঘুরে দেখেন। করমজলে রয়েছে দেশের একমাত্র লবণ পানির কুমিরের প্রজনন কেন্দ্র। সম্প্রতি সেখানে গড়ে উঠেছে কচ্ছপের প্রজনন কেন্দ্র। এ ছাড়া আছে কৃত্রিম পদ্ধতিতে তৈরি ছাড়া হরিণ ও বানরের আবাসস্থল, সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার, ফুট টেইলারসহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় স্থাপনা। এ ছাড়া বনের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ-পালা, পশু-পাখি, বন্য প্রাণী দেখে দর্শনার্থীরা তৃপ্তি মিটিয়ে থাকেন।
মংলার পর্যটন ব্যবসায়ী দ্য সাউদার্ন ট্যুরসের মালিক মিজানুর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে পর্যটকদের আগমন খুব বেশি। এতে আমরা যাঁরা ব্যবসায়ী আছি তাঁদের আয়ও বেশি হচ্ছে। আমরা চাই সারা বছর ধরেই যেন এই অবস্থা বিরাজ থাকে।’ তিনি আরো বলেন, ‘যাঁরা সুন্দরবন ভ্রমণে আসেন, তাঁদের জন্য বন বিভাগের কাছ থেকে পাস নিতে বাগেরহাটে যেতে হয়। এতে যেমন সময় নষ্ট হয় তেমনি দর্শনার্থীরা ভোগান্তির শিকার হন। তাই আমাদের পর্যটন ব্যবসায়ীদের দাবি, যদি মংলা থেকে এই পাস দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়, তাহলে আমরাও উপকৃত হব এবং দর্শনার্থীরা ভোগান্তির হাত থেকে রেহাই পাবেন।’