সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে মেয়র জি কে গউছের পদত্যাগ
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জি কে গউছ। আজ বুধবার বেলা ৩টায় তিনি নিজ কর্মস্থলে পদত্যাগপত্র জমা দেন। ডাকযোগে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব বরাবরও পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জি কে গউছ আজ হবিগঞ্জ পৌরসভার কর্মকর্তা, কর্মচারী ও কাউন্সিলরদের সঙ্গে মতবিনিময় ও কুশল বিনিময় করেন। শেষ কর্মদিবসে স্বাক্ষর করেন অসংখ্য ফাইলে। পৌরসভা থেকে বিদায় নেওয়া উপলক্ষে কুশল বিনিময়কালে আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন জি কে গউছ। তাঁকে বিদায় জানাতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন কর্মকর্তা, কর্মচারী, কাউন্সিলরসহ অনেকেই।
জি কে গউছ তাঁর দায়িত্বকালের দীর্ঘ সময় কারাগারে কাটানোর কথা বলে অনেক অসম্পূর্ণ কাজ না করতে পারার আক্ষেপ করেন। তিনি বলেন, যদি তিনি আরো বড় পরিসরে কাজ করার সুযোগ পান তবে পৌরসভায় দায়িত্বপ্রাপ্তদের কোনো কিছুতে হস্তক্ষেপ করবেন না। উপরন্তু তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন বলে অঙ্গীকার করেন। বলেন, পৌর এলাকার উন্নয়নে তাঁর অসম্পূর্ণ কাজগুলো সম্পন্ন করবেন।
পৌরসভায় শেষ কর্মদিবস শেষে জি কে গউছ হবিগঞ্জ-৩ (সদর, লাখাই ও শায়েস্তাগঞ্জ) আসনের জন্য বিএনপির মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
এ ব্যাপারে মেয়র জি কে গউছ বলেন, বিএনপির চেয়ারপাসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে দলীয় মনোনয়নপত্র দাখিল করেছি। আমরা আন্দোলনের অংশ হিসেবে ও দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলনকে তরান্বিত করার জন্য এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি। বাংলাদেশের জনগণ আমাদের পক্ষে রয়েছে। তারা ভোট কেন্দ্রে যাবে এবং নিজের ভোট রক্ষা করবে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে হবিগঞ্জসহ দেশের সব আসনেই বিএনপির প্রার্থীরা নির্বাচিত হবেন ইনশা আল্লাহ।
জি কে গউছ বলেন, বর্তমান সরকারের এমপিরা ক্ষমতায় থেকে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। অথচ বিরোধী দলের মেয়র ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের পদত্যাগ করে নির্বাচনে অংশ নিতে হচ্ছে।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাতে নিজ বাসভবনে এক সভায় হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জি কে গউছ বলেন, দলের ঐক্য এবং দেশের বৃহত্তর স্বার্থে আমাকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হচ্ছে। পৌরসভার আইনে পদত্যাগ না করেই আমাকে সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু এই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নির্বাচন কমিশন পদত্যাগ করে নির্বাচনে অংশগ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে আমাকে পৌরসভার মেয়রের পদ থেকে পদত্যাগ করতে হচ্ছে। এজন্য আমি পৌরবাসীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। পৌরবাসীর ঋণ কোনোদিন শোধ করতে পারব না।
জি কে গউছ বলেন, আমার জীবনে যত অর্জন সবই হবিগঞ্জ পৌরসভার কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছে। হবিগঞ্জ পৌরবাসী আমাকে টানা তিনবার মেয়র নির্বাচিত করেছেন। আমার দুঃসময়ে পৌরবাসী আমার পাশে থেকেছেন। আমিও চেষ্টা করেছি উন্নয়নের মাধ্যমে পৌরবাসীর ঋণ পরিশোধ করার। কোনো লোভ-লালসা আমাকে নীতি-আদর্শ থেকে বিচ্যুতি ঘটাতে পারেনি। জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও হবিগঞ্জের মানুষের জন্য কাজ করে যাব।