প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে ধ্বস্তাধস্তি, নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত
দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার বিজুল মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার আগে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে চাকরিপ্রার্থী, স্থানীয় লোকজন, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ধস্তাধস্তি হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে স্থগিত হয়েছে ওই বিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়া।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নিয়োগ পরীক্ষা শুরুর আগে এ ঘটনা ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল বিজুল মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক (কৃষি) শূন্য পদে নিয়োগে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে যান ২০ প্রার্থী। এ সময় ওই পদে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টার খবর রটে। তখন পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা প্রার্থীরা বিদ্যালয় মাঠে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন।
খবর পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিক ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেন একাধিক প্রার্থীর কাছে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছেন। কিন্তু তিনি নির্দিষ্ট একজন প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন। এ অভিযোগে ক্ষুব্ধ প্রার্থীরা এবং স্থানীয়রা প্রধান শিক্ষককে তাঁর কার্যালয়ে কয়েক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন।
অবস্থা বেগতিক দেখে প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেন উপস্থিত লোকজনের সামনে একাধিক প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা গ্রহণের কথা স্বীকার করে টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন এবং নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেন।
ভুক্তভোগী রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘আমাকে ওই পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক টাকা নেন। পরীক্ষায় অংশ নিতে এসে শুনি, তিনি আরো অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। এ নিয়ে আমরা সবাই প্রধান শিক্ষকের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠি।’
এ বিষয়ে কথা হয় স্থানীয় যুবলীগের কয়েকজন নেতার সঙ্গে। তাঁরা জানান, একটি পদে নিয়োগ দেওয়ার নামে প্রধান শিক্ষক একাধিক প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। তথ্যটি ফাঁস হয়ে গেলে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রতিবাদ করেন। এ সময় প্রধান শিক্ষকসহ তাঁর পক্ষের লোকজন যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি টাকা গ্রহণের বিষয়টি প্রথমে অস্বীকার করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি জানান, নিয়োগপ্রার্থী রাশেদুজ্জামানের কাছ থেকে ১০ লাখ, মাহফুজ আহমেদের কাছ থেকে সাত লাখ ও গোলাম রব্বানীর কাছ থেকে আড়াই লাখ টাকা নিয়েছেন।
তোফাজ্জল হোসেন আরো জানান, তাঁদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য এই টাকা নেওয়া হয়েছে। তবে সময় সাপেক্ষে সবার টাকা ফেরত দেওয়া হবে। পরে মেধার ভিত্তিতে ওই পদে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে।