নরসিংদীর মেঘনায় ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ
নরসিংদীর মেঘনা নদীতে হয়ে গেল গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা। স্থানীয় শেরে বাংলা ক্লাবের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় এই নৌকাবাইচের। বাঙালির এক সময়ের আনন্দের মাধ্যম এই নৌকাবাইচ দেখতে বৃষ্টি উপেক্ষা করে মেঘনার তীরে সমবেত হন হাজারো নারী-পুরুষ। নৌকাবাইচ উপলক্ষে পুরো এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে উৎসবের আমেজ। নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, নারায়ণগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ থেকে আসা ৫০টি নৌকা প্রতিযোগীতায় অংশ নেয়।
দুপুর থেকেই নরসিংদী শহর ও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলা থেকে নৌকাবাইচ দেখতে শহররক্ষা বাঁধ ও নদীতে ইঞ্জিনবাহী নৌকায় নানা বয়সের হাজারো নারী-পুরুষ ভীড় জমায়। প্রতিযোগীতা উপলক্ষে নৌকাগুলোকে নানা রং-ঢংয়ে সাজানো হয়। নৌকার পাশাপাশি মাল্লারাও সেজেছিলেন বিভিন্ন সাজে। এ ছাড়াও খোল, করতাল, কাঁসা, মন্দিরা, ঢোলসহ নানা বাদ্যযন্ত্র নিয়ে প্রতিযোগিতার নৌকায় ছিলেন গায়কদল।
নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হওয়ায় খুশি স্থানীয়রা। আগামীতে আরও বড় করে নৌকাবাইচ আয়োজনের দাবী তাদের। নতুন প্রজন্মের কাছে দেশীয় ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে প্রতিবছর এ ধরনের নৌকাবাইচের আয়োজন করা হবে এমনটাই প্রত্যাশা করেন উপস্থিত দর্শনার্থীরা।
ভবিষ্যতে এই প্রতিযোগীতা আরো বড় পরিসরে আয়োজন করতে সহযোগিতা করবে নরসিংদী জেলা পরিষদ, জানান জেলা প্রশাসক এড. আসাদোজ্জামান।
৫০টি নৌকা ৬টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে এ প্রতিযোগীতায় অংশ নেয়। প্রতিযোগীতার আয়োজক মো. কায়কোবাদ হোসেন জানান শখ ও নেশা থেকেই নৌকাবাইচে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসেন প্রতিযোগীরা।
ঈদ উপলক্ষে মানুষকে নির্মল আনন্দ দেয়াসহ গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এই নৌকাবাইচের আয়োজন। আগামীতেও এ প্রতিযোগীতা আয়োজিত হবে বলে জানান অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) নজরুল ইসলাম হিরু, বীরপ্রতিক।
প্রতিযোগীতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের ওসমান মোল্লার দল প্রথম হয়ে একটি ২১ ইঞ্চি রঙ্গিন টেলিভিশন ও ২৫ হাজার টাকা জিতে নেয়।