খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। পাশাপাশি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে আগামী ৪ মার্চ আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে মামলা দুটিতে করা জামিন নামঞ্জুর করে খালেদা জিয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে এ পরোয়ানা জারি করেন তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদার। অন্য দুজন হলেন কাজী সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদ।
রাজধানীর বকশীবাজারে ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে মামলা দুটির বিচার চলছে। মামলা দুটিতে সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল আজ। শুরুতেই নিরাপত্তাজনিত কারণে খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হতে পারছেন না জানিয়ে আদালতের কাছে সময়ের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবীরা। পাশাপাশি সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি করারও আবেদন জানান তাঁরা। কিন্তু আদালত সময় আবেদন নামঞ্জুর ও আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় খালেদা জিয়ার জামিন বাতিল করে দুই মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
এ সময় খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন করলে আদালত সেটিও নামঞ্জুর করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বহাল রাখেন।
এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, ‘যে কোর্টের প্রতি আমাদের আস্থা নাই, সেই কোর্টে আজ বেগম জিয়া অবরুদ্ধ আছেন। তাঁর সঙ্গে আমরা আইনজীবীরা দেখা করতে পারি না। খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে গেলেই গ্রেপ্তার করা হয়। আমরা আবেদনে বলেছি, দুটি মামলার চারটি পিটিশন। গতবার যখন খালেদা জিয়া আদালতে আসলেন, তখন তাঁর গাড়িবহরে হামলা করা হয়েছিল। আমরা এ বিষয়ে চকবাজার থানায় জিডি করতে গিয়েছিলাম, তারা আমাদের জিডি নেয়নি।’
সানাউল্লাহ মিয়া আরো বলেন, ‘আদালতের প্রতি অনাস্থার পিটিশনটি হাইকোর্টে পেন্ডিং আছে। যে কোর্টের প্রতি আস্থাই নেই, আজ সেই কোর্ট অন্যায়, বেআইনিভাবে, ক্ষমতার জোরে সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে ওয়ারেন্ট ইস্যু করে। আমরা ন্যায়বিচার পাইনি।’
তবে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল জানান, যথাযথ আইন মেনেই আদালতে হাজির না হওয়ার কারণ দেখিয়ে বেগম খালেদা জিয়াসহ অপর দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
পরে আদালত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দুদকের উপপরিচালক হারুন-অর-রশিদের অসমাপ্ত সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন। তিনি এ মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষী।
এ দুই মামলায় সর্বশেষ গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর আদালতে হাজিরা দিয়েছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন। এ পর্যন্ত ৬৩ কার্যদিবসে সাতবার হাজিরা দিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে আলিয়া মাদ্রাসার অস্থায়ী আদালতে হাজিরা দেন তিনবার।
গত বছরের ২৪ নভেম্বর খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতেই শুরু হয়েছিল জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ।
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালে জিয়া অরফানেজ ও ২০১১ সালে চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলা করে দুদক। মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ মোট আসামি নয়জন।