বিদ্রোহে উসকানির মামলায় মান্না ১০ দিনের রিমান্ডে
সেনাবাহিনীকে বিদ্রোহে উসকানি দেওয়ার মামলায় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
আজ বুধবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে মান্নাকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মাহবুবুর রহমান তা মঞ্জুর করেন।
গত সোমবার গভীর রাত থেকে ‘নিখোঁজ’ ছিলেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। তবে পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম দাবি করেন, মঙ্গলবার রাতে মান্নাকে ধানমন্ডির স্টার কাবাবের গলি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত রোববার বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা ও অজ্ঞাতপরিচয় আরো একজনের সঙ্গে মাহমুদুর রহমান মান্নার ফোনালাপ ফাঁস হয়।
এজাহারে যা বলা হয়েছে
গতকাল মঙ্গলবার ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১৩১ ধারায় গুলশান থানার উপপরিদর্শক সোহেল রানা মান্না এবং তাঁর সঙ্গে ‘টেলিফোন ভাইবারে’ আলাপ করা ‘অজ্ঞাতনামা’র বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, ‘মাহমুদুর রহমান মান্না কর্তৃক জনৈক অজ্ঞাতনামা প্রবাসী ব্যক্তির গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের নির্বাচিত বর্তমান সরকারকে অবৈধ উপায়ে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাগণকে উৎসাহিত করার বিষয়ে টেলিফোন ভাইবারের মাধ্যমে কথোপকথনের বিষয়টি ২২ তারিখ (ফেব্রুয়ারি) রাত ২৩ ঘটিকায় (রাত ১১টায়) দেশ টিভিসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত সংবাদ এবং ২৩ তারিখে দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত ‘জেনারেলদের সাথে বৈঠকে আগ্রহী মান্না’ শীর্ষক শিরোনামে খবর প্রকাশিত হয়। ঘটনার পরে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ইনচার্জ) ২৩ ফেব্রুয়ারি সাধারণ ডায়েরিতে (জিডি) ঘটনাটি লিপিবদ্ধ করেন। আমাকে (সোহেল রানা) তদন্তের নির্দেশ দিলে আমি নির্দেশিত হয়ে উল্লেখিত বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান করি। সেখানে আসামি মান্না ২২ তারিখ ২৩ ঘটিকার পূর্বে তাঁর বর্তমান ঠিকানা গুলশানের বাসা হতে টেলিফোন ভাইবারের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণকে পেশাগত কর্তব্য-কর্ম হতে বিচ্যুত করে বিপথগামী করার উদ্যোগ নিয়ে সাংবিধানিকভাবে উল্লেখকৃত বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারকে অবৈধভাবে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র করায় লিপ্ত হয়।’
এজাহারে আরো আছে, ‘আসামি মান্না ও অজ্ঞাতনামা প্রবাসী আসামি টেলিফোন ভাইবার কথোপকথনের মাধ্যমে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার বিষয়ে সেনাবাহিনীর প্রাক্তন ও বর্তমানে কর্মরত সিনিয়র কর্মকর্তাগণের সঙ্গেও কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ ছাড়া তারা বিএনপির চলমান সহিংস আন্দোলন ও জানমালের ক্ষতিসাধনের বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা করেন।’
সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে মান্নাকে বনানী ‘ই’ ব্লকের একটি বাড়ি থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানিয়েছেন মান্নার স্ত্রী মেহের নিগার। বাড়িটি তাঁর ভাতিজি শাহনামা শারমিনের। সে সময় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মনিরুল ইসলাম দাবি করেন, পোশাকধারী কেউ মান্নাকে নিয়ে যায়নি।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে মান্নার সন্ধান চেয়ে রাজধানীর বনানী থানায় সাধারণ ডায়েরি (ডিজি) করেন তাঁর বড় ভাইয়ের স্ত্রী সুলতানা বেগম। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মান্নাকে সশরীরে হাজির করার জন্য তাঁর সংগঠনের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে রিট করা হয়।