তারুণ্যেই অমর রুদ্র
কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর ৫৯তম জন্মদিন নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে আজ শুক্রবার কবির গ্রামের বাড়ি মংলার মিঠাখালীতে দিনভর কর্মসূচির আয়োজন করে রুদ্র স্মৃতি সংসদ।
সকালে রুদ্র স্মৃতি সংসদ চত্বর থেকে একটি শোভাযাত্রা মিঠাখালী বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান, শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ কবির কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। এরপর দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
পরে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন রুদ্র সংসদের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আফজাল হোসেন। বক্তব্য দেন শিরিয়া বেগম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক ওবায়দুল ইসলাম, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আমিরুল ইসলাম প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, ৫৯ বছর হলেও রুদ্র আমাদের কাছে এখনো সেই ৩৪ বছরের তারুণ্য। তিনি ছিলেন তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক। সমাজের সকল বৈষম্য, অন্যায়ের বিরুদ্ধে তিনি কলম ধরেছেন। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন রুদ্র তাঁর কবিতা, গান নিয়ে বেঁচে থাকবেন। রুদ্রের কবিতা ও গান এখন দুই বাংলায়ই সমান জনপ্রিয়।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রুদ্র স্মৃতি সংসদের সম্পাদক আসাদুজ্জামান টিটো। সভা শেষে রুদ্রের কবিতা আবৃত্তি ও গান পরিবেশন করেন রুদ্রের গড়া সংগঠন ‘অন্তর বাজাও’ ও স্থানীয় শিল্পীরা।
৩৪ বছরের জীবনে রুদ্র রচনা করেন সাতটি কাব্যগ্রন্থ ‘উপদ্রুত উপকূল’ (১৯৭৯), ‘ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম’ (১৯৮১), ‘মানুষের মানচিত্র’(১৯৮৪), ‘ছোবল’ (১৯৮৭), ‘গল্প’ (১৯৮৭) ‘দিয়েছিলে সকল আকাশ’ (১৯৮৮) এবং ‘মৌলিক মুখোশ’(১৯৯০)।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী পরিস্থিতিকে অবলম্বন করে ‘বিষ বিরিক্ষের বীজ’ নামে একটি কাব্যনাট্যও রচনা করেন রুদ্র। এ ছাড়া তিনি বেশ কিছু গল্প লিখেছেন। সংগীতের বীজও রুদ্রের রক্তে প্রোথিত ছিল। তাঁর রচিত ও সুরারোপিত ‘ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’ গানটি দুই বাংলায় অসম্ভব জনপ্রিয়।