পাহাড়ের সন্ত্রাসীদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আহ্বান সিইসির
পাহাড়ের সন্ত্রাসীদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। তিনি বলেছেন, সংঘাতের পথ ভালো পথ নয়। এখানকার কেউ যদি থেকে থাকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মধ্যে, ভুল স্বীকার করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুন। পরিবার-পরিজন নিয়ে শান্তিতে থাকুন, সবাইকে শান্তিতে থাকতে দিন।
আজ রোববার দুপুরে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় সমবেদনা সভা ও অনুদান বিতরণ শেষে সাংবাদিকের সামনে এসব কথা বলেন সিইসি।
১৮ মার্চ সন্ধ্যায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শেষে নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে বাঘাইছড়ি উপজেলা সদরে ফেরার পথে হামলার শিকার হয়ে সাতজন খুনের ঘটনায় নির্বাচন কমিশন ঘোষিত অনুদানের টাকা ও চেক হতাহতদের স্বজনদের হাতে তুলে দেন সিইসি। নিহত সাতজনের পরিবারকে নির্বাচন কমিশনের সাড়ে পাঁচ লাখ এবং পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের ৫০ হাজার টাকাসহ ছয় লাখ টাকার চেক, গুরুতর আহতদের এক লাখ টাকা এবং অন্য আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন তিনি।
সিইসি বাঘাইছড়িতে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডকে একটি মর্মান্তিক ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, ‘ভবিষ্যতে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এমন হত্যাকাণ্ড কেউ যাতে পুনরাবৃত্তি না করতে পারে নির্বাচন কমিশন সেই বিষয়ে সতর্ক রয়েছে। ভবিষ্যতে নির্বাচনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করা হবে।’
কে এম নূরুল হুদা বলেন, সংঘাতের পথ ভালো পথ নয়। আমাদের দেশে সর্বহারা অনেক বাহিনী ছিল, তারা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে। সব জায়গা থেকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড গুটিয়ে এসেছে। এখানকার কেউ যদি থেকে থাকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মধ্যে, তাদেরকে আমি আবারও আহ্বান জানাই, ভুল স্বীকার করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুন, পরিবার-পরিজন নিয়ে শান্তিতে থাকুন, সবাইকে শান্তিতে থাকতে দিন।
বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদের সভাপতিত্বে সমবেদনা সভায় নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম অঞ্চলের জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান, নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম, খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হামিদুল হক, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) খন্দকার গোলাম ফারুক, আনসার ও ভিডিপির চট্টগ্রাম অঞ্চলের রেঞ্জ প্রধান মো. শামসুল আলম, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) খাগড়াছড়ি সেক্টর কমান্ডার গাজী মুহাম্মদ সাজ্জাদ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম, রাঙামাটির পুলিশ সুপার মো. আলমগীর কবির, খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আহমার উজ্জামানসহ পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৮ মার্চ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দায়িত্ব পালন শেষে নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে উপজেলা সদরে ফেরার পথে সন্ত্রাসী হামলার মুখে পড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে সাতজন নিহত ও ৩৩ জন আহত হয়।