নুসরাত হত্যার আসামি শামীমকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ
ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার আসামি শাহাদাত হোসেন শামীমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
তিন দিনের রিমান্ড শেষে শামীমকে আজ মঙ্গলবার বিকেলে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম জাকির হোসাইনের আদালতে তুলে ফের পাঁচ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে বৃহস্পতিবার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। ফেনী পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান এ তথ্য জানিয়েছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ফেনী পিবিআইয়ের পরিদর্শক শাহ আলম পুনরায় শামীমের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছেন।
গত ১৪ এপ্রিল একই আদালতের কাছে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যায় নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন শাহাদত হোসেন শামীম। গত বৃহস্পতিবার একই আদালত শামীমকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন। অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে পরিচিত শাহাদত হোসেন শামীমকে ১২ এপ্রিল সকালে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থেকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।
নুসরাত হত্যার দ্রুত বিচারের দাবিতে মঙ্গলবার ফেনী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন ট্রাংকরোডে মানববন্ধন করে ‘যৌন নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থী জোট’। ছবি : এনটিভি
এদিকে নুসরাত হত্যার দ্রুত বিচারের দাবিতে ‘যৌন নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থী জোট’ মঙ্গলবার বিকেলে ফেনী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন ট্রাংকরোডে মানববন্ধন করেছে। মানববন্ধনে বক্তারা নুসরাতের হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান। এ ছাড়া বক্তারা সোনাগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনসহ যারা এ মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চেয়েছিলেন তাদেরকেও এই মামলায় অন্তর্ভুক্ত করে বিচারের দাবি জানান।
এর আগে সংগঠনটির সদস্যরা সোনাগাজী জিরো পয়েন্টে নুসরাত হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধনে অংশ নেন। এদিন নুসরাতের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা জানান তাঁরা।
গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। মাদ্রাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করছে এমন সংবাদ দিলে ওই ভবনের ছাদে যান নুসরাত। সেখানে বোরকা ও নেকাব পরা চার-পাঁচজন তাঁকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে করা মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। অস্বীকৃতি জানালে নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় ওই সব দুর্বৃত্ত।
গত ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া নুসরাত।