ফণীর প্রভাবে বরগুনায় বেড়েছে তাপমাত্রা
উপকূলীয় দুর্যোগপ্রবণ জেলা বরগুনায় ঘূর্ণিঝড় ফনীর তেমন কোনো প্রভাব এখনো পড়েনি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বরগুনার কোথাও কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে সকাল থেকে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি বরগুনা ও এর আশপাশের এলাকায় কখনো কখনো আকাশ সামান্য মেঘাচ্ছন্ন আবার কখনো সূর্যের দেখা মিলেছে।
এদিকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবিলায় সর্বশেষ প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে ও পরামর্শ দিতে বিকেলে বরগুনার জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলবেন বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবিলায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বরগুনা জেলা প্রশাসন। বেলা ১১টায় বরগুনার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সম্পন্ন হয়েছে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা। সভায় বরগুনার সব বিভাগের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে তাঁদের পরিকল্পনার কথা জানান সংবাদ কর্মীদের। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড় পূর্ববর্তী ও পরবর্তী উদ্ধার অভিযানের জন্য প্রস্তুত রয়েছে প্রায় ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী কর্মী।
এদিকে বরগুনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বরগুনায় ৩৩৫টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এ ছাড়াও প্রস্তুতির জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে আরো ৩১২টি আশ্রয়ন কেন্দ্র। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে অন্তত পাঁচ লাখ মানুষ আশ্রয় নিতে সক্ষম হবে। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড়ে সম্ভাব্য ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ২২৬ বান্ডিল ঢেউটিন, ৪২৩ মেট্রিকটন খাদ্য শস্য ও ১৩ লাখ ৯৬ হাজার টাকা রাখা হয়েছে। এ ছাড়া দুই হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার মজুদ করেছে বরগুনা জেলা প্রশাসন।
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) বরগুনা সদর উপজেলার টিম লিডার মো. জাকির হোসেন মিরাজ বলেন, ঘূর্ণিঝড় পূর্ববর্তী ও পরবর্তী যেকোনো জরুরি প্রস্তুতি মোকাবিলায় সিপিপির সাড়ে সাত হাজার কর্মী বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রায় ১০ হাজার কর্মী বরগুনার বিভিন্ন দুর্যোগপ্রবণ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে অবস্থান নিয়েছে।
বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে তীরে থাকা জেলেদের সমুদ্রযাত্রা বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া সমুদ্রে থাকা অনেক জেলে ট্রলার সুন্দরবনে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছেন। আর যেসব ট্রলার এখনো আশ্রয় নেয়নি, সেসব ট্রলার আজ সন্ধ্যার মধ্যে নিরাপদ আশ্রয় নেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বরগুনার জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণীর পূর্ববর্তী ও পরবর্তী করণীয় নিয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা সম্পন্ন করেছে। এ ছাড়া বরগুনার সব আশ্রয়ন কেন্দ্র খোলা রাখা হয়েছে। মজুদ রাখা হয়েছে বিপুল পরিমাণ শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, এরই মধ্যে বরগুনার সব রুটের নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় মাইকিং করে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে।