বিএনপির সম্মেলনে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, খাবার লুট
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও খাবার লুটের ঘটনায় পণ্ড হয়ে গেছে উপজেলা বিএনপির পূর্বনির্ধারিত সম্মেলন। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা পুলিশ নিয়ে ওই হামলা চালান বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতারা।
রায়পুরা উপজেলা বিএনপির নেতারা আজ শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে নরসিংদী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নেছার উদ্দিন আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘আজ সকালে রায়পুরা উপজেলার দৌলতকান্দি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। এ উপলক্ষে স্কুলমাঠে বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল। কাউন্সিলর ও অতিথিদের খাবারের জন্য দুটি গরু জবাই করে রান্নাবান্নার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা মিছিল নিয়ে এসে পুলিশের উপস্থিতিতে আমাদের প্যান্ডেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। ভেঙে চুরমার করা হয় মঞ্চ ও সভাস্থলের চেয়ার-টেবিল। লুট করে নিয়ে গেছে অতিথিদের আপ্যায়নের জন্য গরুর মাংসসহ বিভিন্ন খাবারসামগ্রী। পরে রাত ২টায় পুলিশ আমার বাড়িসহ বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাড়িতে তল্লাশির নামে তাণ্ডব চালিয়েছে। অথচ আমরা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে সম্মেলনের যাবতীয় আয়োজন করেছিলাম।’
উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবদুর রহমান খোকন বলেন, ‘অতিথিদের আপ্যায়নের জন্য সম্মেলনস্থলে রান্নার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। মঞ্চ ভাঙচুরের পর সেখান থেকে পুলিশভ্যানে অতিথিদের জন্য আনা গরুর মাংসসহ বিভিন্ন খাবার লুট করা হয়েছে। তা ছাড়া বিএনপি নেতা-কর্মীদের সম্মেলনস্থলে যেতে মোবাইলে ফোন করে নিষেধ করেছেন খোদ রায়পুরা থানার পুলিশ।
আবদুর রহমান খোকন আরো বলেন, সম্মেলনে ২৪টি ইউনিয়নের কয়েক হাজার নেতা-কর্মীর অংশ নেওয়ার কথা ছিল। এই খবরে ভীত হয়ে যায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও পুলিশ প্রশাসন।
বিএনপি নেতা-কর্মীদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজহারুল ইসলাম সরকার। তিনি বলেন, মূলত বিএনপির অন্তঃকোন্দলের কারণেই উপজেলা বিএনপির সম্মেলন পণ্ড হয়ে গেছে। প্রায় প্রতিটি সম্মেলনের বেলায় একপক্ষের সম্মতি থাকলে অপর পক্ষ বাধা দিয়েছে।
সম্মেলনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ প্রসঙ্গে ওসি বলেন, বিএনপির বিবদমান দুটি পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছিল। কিন্তু স্থানীয়দের হস্তক্ষেপের কারণে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি।
যোগাযোগ করা হলে রায়পুরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন বলেন, উপজেলায় বিএনপির দুই তিনটি গ্রুপ রয়েছে। তারা হামলা, ভাঙচুর চালাতে পারে। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কেউ ওই ঘটনায় জড়িত নন বলে তিনি দাবি করেন।
বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন মাস্টার, সিনিয়র সহ-সভাপতি সুলতান উদ্দিন মোল্লা, কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা ফজলুর রহমান, বিএনপি নেতা কাজী আশরাফুল আজীজ, আলী রেজাউর রহমান রিপন, ফাইজুর রহমান চেয়ারম্যান, শাজাহান মল্লিক, আমিনুল হক বাচ্চুসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।