হরতালে ক্লাস নেওয়ায় প্রধান শিক্ষিকাকে ‘লাল চিঠি’
হরতালের মধ্যে ক্লাস নেওয়ায় রাজশাহী মহানগরীর লক্ষ্মীপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকাকে লাল রঙের কাগজে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। ‘আন্দোলনকামী কর্মীবাহিনী’ নামে পাঠানো ওই চিঠিতে হরতালে ক্লাস নিলে স্কুলে বোমার বিস্ফোরণ ঘটানোর হুমকি দেওয়া হয়। আজ শুক্রবার সকালে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা আইরিন জাফর চিঠিটি হাতে পেয়েছেন।
চিঠিতে লক্ষ্মীপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নাম ব্যবহার করা হয়নি। এ ছাড়া প্রাপককে ‘জনাব/জনাবা’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে। খামের সিলটি অস্পষ্ট হওয়ার কারণে কোন জায়গা থেকে চিঠিটি পাঠানো হয়েছে, তা বোঝা যায়নি।
চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘হরতালের দিনগুলোতে আপনার প্রতিষ্ঠান যদি চালান, তাহলে আপনার গতিপথ আমরা পরখ করছি। কখন, কবে, কোন সময় আপনার প্রতিষ্ঠানে পেট্রলবোমা নয়, অন্য কোনো বোমা বিস্ফোরিত হলে তার দায়িত্ব কে নিবে- আপনি, না সরকারি দল, না বিরোধী দল।’
এরপর হুঁশিয়ারি দিয়ে লেখা হয়, ‘যদি এ রকম কোনো ঘটনা ঘটে, তাহলে শিশুদের সমস্ত দায়-দায়িত্ব আপনার ওপরেই বর্তাবে বলে আমরা মনে করি।’ চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, ‘শেখ হাসিনার চক্রান্ত দেশের জনগণ আজ ধরতে পেরেছে। সে জন্য সকলেই সচেতন। শুধু আপনি এখনো সচেতন হন নাই, সে জন্য আমরা দুঃখিত। আমরা মনে করছি, এ চিঠি পাওয়ার সাথে সাথে আপনার বোধোদয় হবে। আপনি হরতালের দিনগুলোতে ছাত্রছাত্রীদের সাধারণ পোশাকেও প্রতিষ্ঠান চালাবেন না।’
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষিকা আইরিন জাফর এনটিভি অনলাইনকে বলেন, প্রায় দুই মাস ধরে অবরোধ ও হরতাল চলায় দীর্ঘ সময় শিক্ষার্থীরা আর বাসায় থাকতে পারছে না। প্রতিদিন তারা বিদ্যালয়ে এসে ভিড় করছে। অভিভাবকরা বলছেন, পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে, সিলেবাস শেষ হবে না। এ জন্য শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে তারা ক্লাস নিচ্ছেন।
এদিকে চিঠি পাওয়ার পর শুক্রবার দুপুরে প্রধান শিক্ষিকা আইরিন জাফর রাজপাড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান জানান, পুলিশ বিষয়টি সতর্ক পর্যবেক্ষণে রেখেছে। স্কুলের আশপাশে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।