ফুলেফেঁপে ভয়াবহ তিস্তা, এলাকা ছাড়তে মাইকিং
তিস্তা নদীর পানি ফুলেফেঁপে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আজ শনিবার সকালে ব্যারেজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
পানির এই প্রবল চাপের কারণে তিস্তা ব্যারেজের বাইপাস ফ্ল্যাট গেইট স্বাভাবিকভাবে খুলে যাওয়ার কথা থাকলেও তা খুলেনি। এ কারণে গতকাল রাত থেকেই ব্যারেজ এলাকার লোকজনকে বাড়িঘর ছেড়ে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর জানিয়েছেন।
যত সময় যাচ্ছে পানি তত বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় লালমনিরহাটের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এরই মধ্যে অর্ধলাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। চরাঞ্চলের রাস্তা ভেঙে পানি প্রবেশ করেছে বিভিন্ন লোকালয়ে।
গতকাল শুক্রবার রাতে তিস্তার পানি প্রবাহ ছিল বিপৎসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার উপরে। তখন থেকেই জেলা প্রশাসন মাইকিং করা শুরু করে।
স্থানীয়রা জানায়, গতবারের তুলনায় এবারের পানির পরিমাণ বেশি। আটদিন ধরেই নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। বাড়িঘরে পানি চলে আসায় রান্নাবান্নাও করতে পারছে না তারা। এমন অবস্থায় মানুষ ঘর থেকেও বের হতে পারছে না। রাস্তাঘাটও ভেঙে গেছে।
সবশেষ, তিস্তার পানির তোড়ে হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের একটি কাঁচা রাস্তা ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ে। একই এলাকার অপর একটি পাকা রাস্তার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। উপজেলার গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, ডাউয়াবাড়ি ও পাটিকাপাড়া ইউনিয়নের নদী তীরবতী বিভিন্ন এলাকার বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়েছে।
আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা আরো বেড়েছে। সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, কুলাঘাট ও মেগালহাটসহ বেশকিছু এলাকার নিম্নাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কালীগঞ্জ উপজেলারও তিস্তা তীরবর্তী কয়েকটি এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ছে।
বন্যায় অন্তত ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেক রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় স্থানীয়ার দুর্ভোগে পড়েছে। অন্তত ২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।
জেলা প্রশাসন এ পর্যন্ত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১১০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এদিকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো খোলা রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।