বান্দরবানে অপহরণে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার ৫ জন রিমান্ডে
অপহরণের ৩০ দিন পেরিয়ে গেলেও বান্দরবানে একজন গাইডসহ অপহৃত দুই পর্যটককে খোঁজ মেলেনি এখনো। এদিকে পর্যটক অপহরণের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়ার পাঁচজনকে একদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
আজ সোমবার অস্ত্র-চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার পাঁচজনকে বান্দরবানের বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করে পাঁচদিন করে রিমান্ড চায় পুলিশ। তবে আদালত প্রত্যেকের একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন - কার্বারি প্রাচিং ম্রো, বড়তলীর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য অনুচন্দ্র ত্রিপুরা, রুমা বাজারের ব্যবসায়ী জয়পাল বড়ুয়া, স্থানীয় বাসিন্দা মেনচং ম্রো এবং লারাম বম।
রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুর ইসলাম জানান, পর্যটক অপহরণের ঘটনায় গত ১৩ অক্টোবর আটকের পর এ পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশ বাদী হয়ে অস্ত্র ও চাঁদাবাজির মামলায় এঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। পরে আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আজ দুপুরে এঁদের আবারও বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করে পাঁচদিনের রিমান্ডের আবেদন জানালে আদালত একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তবে অপহৃত পর্যটকদের এখনো খোঁজ পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।
এদিকে যৌথবাহিনী জানিয়েছে, বান্দরবানের মিয়ানমার সীমান্ত অঞ্চলে যৌথবাহিনীর সন্ত্রাস দমন অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
গত ৪ অক্টোবর বান্দরবানের সীমান্তবর্তী রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার বড়তলী ইউনিয়নের দুর্গম সিদ্ধুপাড়া থেকে অস্ত্রের মুখে পর্যটক জাকির হোসেন মুন্না (৩০), আব্দুল্লাহ আল জোবায়ের (৩২) এবং স্থানীয় গাইড মাংসাই ম্রোকে (২৮) অপহরণ করা হয়। এখনো তাঁদের কোনো সন্ধান পাওয়া না যাওয়ায় দুর্গম অঞ্চলগুলোতে ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকদের যাতায়াতের হার কিছুটা কমেছে।
তবে বগালেক, কেওক্রাডং এবং জাদিপাই ঝর্ণাসহ দর্শনীয় স্থানগুলো ভ্রমণে পর্যটকদের সংখ্যা কমেনি। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে পর্যটকদের জন্য কিছু কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এখন প্রশাসনের তালিকাভুক্ত গাইডের মাধ্যমে নির্ধারিত ফরমে নাম-ঠিকানা, মোবাইল ফোন নম্বর এবং ভ্রমণের স্থানগুলো লিখে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে জমা দিতে হচ্ছে।
রুমা উপজেলার স্থানীয় গাইডদের সংগঠন পথ প্রদর্শকের সহসভাপতি বিমল বড়ুয়াসহ অন্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পর্যটক অপহরণের ঘটনায় বান্দবানে পর্যটকদের আগমনের হার কমেছে। রুমা উপজেলায় অর্ধশতাধিক পাহাড়ি-বাঙালি গাইড আছেন যাঁদের আয়ে সংসার চলে। পর্যটক কমে যাওয়ায় তাঁদেরও কাজের অভাব দেখা দিয়েছে। অপহৃত পর্যটকরা মুক্তি না পেলে পর্যটকদের আগমন আরো কমবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় গাইডরা। তাই দ্রুত অপহৃতদের মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।
গত মাসে তিনজনকে অপহরণ ছাড়াও গত ১৮ অক্টোবর বান্দরবানের সীমান্তবর্তী সেপ্রুঝিড়ি এলাকায় যৌথবাহিনীর সঙ্গে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গোলাগুলিতে গ্রাম পুলিশের সদস্য নেসং ম্রো (৩৮) নিহত হন। আহত হন সেনাবাহিনীর সৈনিক আবুল কাশেম এবং আনসার সদস্য মো. হান্নান। এ ছাড়া ২২ অক্টোবর সীমান্তের সেপ্রুঝিড়ি এলাকায় থেকে জলপাই রঙের পোশাক পরিহিত গুলিবিদ্ধ অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে যৌথবাহিনী।