ডিশের তার ঠিক করার কথা বলে গণধর্ষণ, পরে হত্যা
চাঁদপুরে স্কুলশিক্ষিকা জয়ন্তী চক্রবর্তী হত্যা রহস্য উদঘাটন করার দাবি করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে জামাল হোসেন ও আনিছুর রহমান নামের দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে তারা।
রোববার বিকেলে চাঁদপুরে পিবিআইয়ের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান পিবিআইয়ের চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল।
চাঁদপুর শহরের ষোলঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন জয়ন্তী চক্রবর্তী। ২১ জুলাই নিজ বাসায় গণধর্ষণের পর নৃশংসভাবে খুন হন তিনি।
পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার ইকবাল বলেন, ২১ জুলাই চাঁদপুর জেলা শহরের ষোলঘর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) স্টাফ কোয়ার্টারে শিক্ষিকা জয়ন্তী চক্রবর্তী তাঁর বাসভবনে একা ছিলেন। এ সময় ওই এলাকার ডিশ লাইনের মালিক আনিছুর রহমান ও ডিশের লাইনম্যান জামাল হোসেন মাদকসেবন করে ডিশের তার ঠিক করার কথা বলে জয়ন্তীর রুমে ঢুকেন। তারা দুজনই জয়ন্তীকে ধর্ষণ করেন। এরপর তা ধামাচাপা দিতে ওই বাসার টেবিলে থাকা ফল কাটার ছুরি দিয়ে গলা কেটে জয়ন্তীকে হত্যা করে পালিয়ে যান।
হত্যাকাণ্ডের পর ২৫ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চাঁদপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অনুপ চক্রবর্তী সন্দেহভাজন হিসেবে আনিছুর রহমান ও জামাল হোসেনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে তাদের ছেড়ে দেন। এর পর মামলাটি পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। প্রায় এক মাস ধরে নিবিড়ভাবে মামলার কার্যক্রম পরিচালনা শেষে রোববার বিকেলে স্কুলশিক্ষিকা জয়ন্তী চক্রবর্তী হত্যার রহস্য গণমাধ্যমের কাছে উপস্থাপন করে পিবিআই।
পিবিআইয়ের পরিদর্শক (প্রশাসন) মীর মাহবুবুর রহমান জানান, আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে দুই খুনিকে গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হয় পিবিআই পুলিশ। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। গত ১৭ আগস্ট আসামি জামাল হোসেন গণধর্ষণ ও হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। সহযোগী হিসেবে আনিছুর রহমানের কথাও বলেছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম জোনে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার ইকবাল, চাঁদপুরে দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শংকর কুমার দাসসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে অভিযুক্তদের সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা না হলেও গ্রেপ্তার হওয়া জামাল হোসেন ও আনিছুর রহমানের ছবি সরবরাহ করে পিবিআই। বর্তমানে এই দুইজন কারাগারে রয়েছে। তাদের দুইজন ষোলঘর এলাকার আশপাশের বাসিন্দা।