শরীয়তপুরে ডেঙ্গুতে কলেজছাত্রের মৃত্যু
শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলায় মো. দাদন লস্কর (২৫) নামের এক কলেজছাত্র ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তিনি উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের মাছুয়াখালী গ্রামের জামাল হোসেন লস্করের ছেলে।
গত শুক্রবার থেকে দাদন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি ছিলেন। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে জেলা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে যাওয়ার পথেই তিনি মারা যান।
দাদন গোসাইরহাট সরকারি সামসুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিন ভাই আর এক বোনের মধ্যে তিনিই ছিলেন বড়। অভাবের সংসারের হাল ধরতে তিনি রাজধানীর বানানীর একটি হোটেলে ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করতেন।
এ নিয়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে শরীয়তপুরে চারজনের মৃত্যু হলো। এর মধ্যে তিনজন নারী ও একজন পুরুষ। গত ৩০ জুলাই জাজিরা উপজেলার স্কুলশিক্ষিকা বর্ষা আক্তার (২৭), ৫ আগস্ট ভেদরগঞ্জ উপজেলার ইতালিপ্রবাসী হাফসা লিপি (৩০) এবং ২১ আগস্ট ডামুড্যা উপজেলার গৃহবধূ সুরাইয়া বেগম (৩৭) মারা যান।
দাদনের বাবা জামাল হোসেন লস্কর বলেন, গত ১৫ আগস্ট দাদনের জ্বর হয়। জ্বর না কমায় ২২ আগস্ট বাড়ি চলে আসে। পরদিন শুক্রবার জ্বর নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। সেখানে পরীক্ষা করে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। তার পর থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই চিকিৎসা চলছিল দাদনের।
গতকাল রোববার রাতে দাদনের অবস্থার অবনতি হয়। তখন তাঁকে চিকিৎসকরা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়ায় তাঁকে প্রাইভেটকারে করে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছিল। পথেই দাদন মারা যান বলে জানান তাঁর বাবা।
গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগী দাদন গোসাইরহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি ছিলেন। রোববার অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। হাসপাতালে নেওয়ার সময় পথেই তাঁর মৃত্যু হয়।’
শরীয়তপুরের সিভিল সার্জন মো. খলিলুর রহমান বলেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গোসাইরহাটের একজন ছাত্র মারা গেছেন। ছেলেটি ঢাকায় বসবাস করতেন। ঢাকা থেকেই আক্রান্ত হয়ে শরীয়তপুরে এসেছেন।
‘জেলায় এ পর্যন্ত ৩৮১ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় ১০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে জেলার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। জেলার ডেঙ্গু পরিস্থিতি অনেকটা ভালো মনে হচ্ছে। কারণ আগের থেকে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কমছে,’ যোগ করেন সিভিল সার্জন।