বাবার আসনে নির্বাচন করতে চান সাদ এরশাদ
রংপুর-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে অংশ নিতে চান জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ছেলে সাদ এরশাদ। তিনি বলেছেন, ‘দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে আমি বাবার আসনে নির্বাচন করব।’
আজ শনিবার বিকেলে রংপুরে এরশাদের চেহলাম অনুষ্ঠানের ফাঁকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন সাদ এরশাদ।
রংপুর নিয়ে পরবর্তী পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে সাদ এরশাদ বলেন, ‘পরিকল্পনা তো অনেক কিছুই আছে। কতগুলো কাজ এখনো শেষ হয়নি। অসমাপ্ত আছে। ওইসব কাজ আমি শেষ করতে চাই ইনশা আল্লাহ।’
আপনার নিজের এখানে (রংপুর-৩ আসন) নির্বাচন করার ইচ্ছে আছে কিনা জানতে চাইলে সাদ এরশাদ বলেন, ‘নিশ্চয়।’ আর আজকের দিনে আপনার অভিমত কি জানতে চাইলে বলেন, ‘আপনারা আব্বার জন্য দোয়া করবেন। উনি যেন জান্নাতবাসী হোন। আর উনি যদি কোনো ভুল করে থাকেন বা আপনাদের কষ্ট দিয়ে থাকেন তো আপনারা উনাকে ক্ষমা করে দিবেন।’
বাবার আসনে সাদ এরশাদের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘আমরা আশা করছি এখানে নির্বাচন হবে জোটগতভাবে। কারণ এটা জাতীয় পার্টির দীর্ঘদিনের আসন। এ আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যার মরহুম হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নির্বাচন করেছেন। তিনি এ আসন থেকে সবচেয়ে বেশি ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। সেই কারণে আমরা বর্তমান সরকারের কাছে আশা করি বা আমরা মনে করি বর্তমানে আমরা জোটে না থাকলেও বিরোধী দলে থাকলেও গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কিন্তু একসঙ্গে করেছি। সুতরাং আমরা মনে করি এ নির্বাচনটাও একসঙ্গে করলে এটা জনগণের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে যে আমরা এখনো জোটে রয়েছি।’
এর আগে আজ বিকেল ৩টার পর এরশাদের স্ত্রী সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, সাদ এরশাদ, মসিউর রহমান রাঙ্গাসহ দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ পল্লী নিবাসে আসেন। তাঁরা এরশাদের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন এবং কবর জিয়ারত করেন।
কবর জিয়ারত শেষে সাদ এরশাদ মা রওশন এরশাদকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় স্বামীর কবর লক্ষ্য করে রওশন বলেন, আমাদের এতিম করে তুমি কেন শুয়ে আছো? উঠে আসো।
‘মাটি থেকে তোলো। কেন মাটিতে শুয়ে আছে? শোনো না, ওঠো না কেন?,’ বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন রওশন এরশাদ। তখন তাঁকে সান্ত্বনা দেন এরশাদের ভাগ্নে ও দলের মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি।
এর আগে, পল্লী নিবাসে দোয়া মাহফিলে যোগ দেন মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও এরশাদের ছেলে সাদ এরশাদ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এরশাদের কবর জিয়ারত শেষে তাঁর স্মরণে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা।
গত ১৪ জুলাই সকাল পৌনে ৮টায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ৮৯ বছর বয়সে মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পর ১৬ জুলাই রংপুর-৩ আসন শূন্য ঘোষণা করে জাতীয় সংসদ সচিবালয়। আগামীকাল ওই আসনের উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৩ আসনে ১ লাখ ৪২ হাজার ৯২৬ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন জাতীয় পার্টির সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের প্রার্থী রিটা রহমান পেয়েছিলেন ৫৩ হাজার ৮৯ ভোট। ভোট পড়েছিল ৫২ দশমিক ৩১ শতাংশ।