১৩ দিনেও উদ্ধার হয়নি কয়লাবোঝাই জাহাজ, বাড়ছে ঝুঁকি
বাগেরহাটের মংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলে কয়লাবোঝাই কার্গো জাহাজ ডুবে যাওয়ার ১৩ দিনেও উদ্ধার কাজ শুরু হয়নি। দিন যত যাচ্ছে ডুবন্ত জাহাজটি নিয়ে ঝুঁকিও তত বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কায় প্রতিনিয়ত নদীর পানি সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
বনবিভাগ জানায়, গত ২৭ অক্টোবর বন্দর চ্যানেলের হাড়বাড়িয়ায় থাকা একটি বিদেশি জাহাজ থেকে প্রায় ৫১০ মেট্রিকটন কয়লাবোঝাই করে যশোরের নওয়াপাড়া যাওয়ার পথে কার্গো জাহাজ এম ভি জিয়া রাজের তলা ফেটে নদীতে ডুবে যায়। ঘটনার পর বনবিভাগসহ স্থানীয় প্রশাসন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে দুর্ঘটনাকবলিত স্থানটি লাল নিশানা দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। প্রথম পর্যায়ে জাহাজটির আংশিক অংশ দেখা গেলে এখন জাহাজটি সম্পূর্ণ পানির নিচে ডুবে গেছে।
এদিকে জাহাজটি ধীরে ধীরে নদীর মধ্যভাগে সরে যাওয়ায় ঝুঁকিও আরো বাড়ছে। জোয়ারের সময় তো বটেই, ভাটার সময় জাহাজটি দেখা না যাওয়ায় নতুন করে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।
স্থানীয় জেলে মহাজন নান্না খান জানান, জাহাজটি পুরোপুরি পানির নিচে থাকায় এবং দেখা না যাওয়ার কারণে যেকোনো সময় আবার নৌদুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ ছাড়া যারা নদীতে মাছ ধরে তাদের জাল ও নৌকা জোয়ারের টানে জাহাজের ওপর পড়ে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কাও রয়েছে।
এ বিষয়ে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘আজ ওঠাবো, কালা ওঠাবো বলে জাহাজ মালিকপক্ষ কালক্ষেপন করছে। ইতিমধ্যে জাহাজের মালিক ও চালকের বিরুদ্ধে সুন্দরবনের জলজ, বনজ ও প্রাণিসম্পদের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ মামলা করা হয়েছে।’
এ বন কর্মকর্তা জানান, ডুবন্ত জাহাজের কয়লা থেকে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হবে কি না সে বিষয়ে কাজ করছে পরিবেশ অধিদপ্তর। তাদের রিপোর্ট দেওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে পরিবেশ অধিদপ্তরের খুলনার পরিচালক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘পানির সঙ্গে কয়লার বিষাক্ত পদার্থ ছড়িয়ে জীববৈচিত্রের কোনো ধরনের ক্ষতি হচ্ছে কি না সেজন্য প্রতিনিয়ত পানির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। এই রিপোর্ট শিগগিরই তালিকা আকারে প্রকাশ করা হবে।’ তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্গো উত্তোলন না করলে জাহাজ মালিক ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’