শিক্ষকের ভুলে বান্দরবানে পুরোনো পদ্ধতির প্রশ্নে পরীক্ষা
বান্দরবানে জেএসসি পরীক্ষায় সৃজনশীলের ৫৪ জন শিক্ষার্থী শিক্ষকের ভুলে ২০১৩ সালের পুরোনো পদ্ধতির প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়েছে। গত রোববার বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গণিত পরীক্ষা দেয় পাঁচটি বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী।
পুরোনো পদ্ধতির প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দেওয়ায় পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা ফলাফল খারাপের দুশ্চিন্তায় ভুগছেন।
পরীক্ষার্থী ও শিক্ষকরা জানান, গত রোববার জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় (জেএসসি) গণিত পরীক্ষায় বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পাঁচটি বিদ্যালয়ের নিয়মিত-অনিয়মিত ৬১ জন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষায় অংশগ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু ৫৬ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। তার মধ্যে দুজন ২০১৩ সালের এবং ৫৪ জন ২০১৪ সালের অনিয়মিত পরীক্ষার্থী। শিক্ষা বোর্ডের নীতিমালা অনুযায়ী, ২০১৩ সালের পরীক্ষার্থীদের পুরোনো পদ্ধতিতে এবং ২০১৪ সালের পরীক্ষার্থীদের নতুন সৃজনশীল পদ্ধতির প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা গ্রহণের কথা বলা রয়েছে। কিন্তু শিক্ষকদের ভুলের কারণে সৃজনশীলের নতুন নিয়মের ৫৪ জন পরীক্ষার্থীও পুরোনো পদ্ধতির প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়েছেন। দায়িত্বরত শিক্ষকদের প্রশ্নপত্রের বিষয়ে জানালেও শিক্ষকরা গুরুত্ব না দিয়ে পুরোনো পদ্ধতির প্রশ্নপত্র ঠিক আছে বলে পরীক্ষার্থীদের ধমক দেন বলে অভিযোগ পরীক্ষার্থীদের।
ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবক মহরম আলী, আবু তাহেরসহ কয়েকজন বলেন, নতুন সৃজনশীল পদ্ধতির প্রশ্নপত্রের বদলে পুরোনো পদ্ধতির প্রশ্নপত্রে ৫৪ জন ছাত্রছাত্রীর পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। লেখাপড়ার সঙ্গে প্রশ্নপত্রের পদ্ধতিগত মিল না থাকায় পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা ভালো হয়নি। শিক্ষকদের ভুলের কারণে ৫৪ জন পরীক্ষার্থী গণিত পরীক্ষায় খারাপ ফলাফল করলে দায়ভার নেবে কারা।
বান্দরবান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরি শংকর দাশ জানান, সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে তাঁদের (বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের) ৩৮ জনসহ পাঁচটি বিদ্যালয়ের ৫৪ জন পরীক্ষার্থী ভুলক্রমে সৃজনশীলের পরিবর্তে পুরোনো পদ্ধতির প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়েছে। অন্য বিদ্যালয়গুলো হচ্ছে-রেইছা উচ্চ বিদ্যালয়, বিলকিছ বেগম উচ্চ বিদ্যালয়, কালেক্টরেট স্কুল ও চিম্বুক জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়। পুরোনো পদ্ধতির প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দেওয়ায় ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। আমরা বিষয়টি প্রশাসন ও শিক্ষা বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করেছি।
সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ইসহাক খন্দকার জানান, শিক্ষা বোর্ডের দেওয়া ডিআরএ পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা সন উল্লেখ না থাকায় অসাবধানতাবশত অনিচ্ছাকৃত ভুলের ঘটনা ঘটেছে। পরীক্ষার্থী ছাত্রছাত্রীরাও দায়িত্বরত শিক্ষকদের বিষয়টি জানায়নি। তারপরও পরীক্ষাকেন্দ্রে দায়িত্বরত চারজন শিক্ষকের কাছে কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী আহমেদ জানান, ২০১৪ সালের ৫৪ জন পরীক্ষার্থী ভুলক্রমে সৃজনশীলের পরিবর্তে ২০১৩ সালের পুরোনো পদ্ধতির প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর চট্টগ্রাম বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাহাবুব হাসান সমস্যার কথাটি শুনে পরীক্ষার্থী ৫৪ জন ছাত্রছাত্রীর রেজিস্ট্রেশন ও ক্রমিক নম্বর পাঠাতে বলেছেন। বোর্ড কর্মকর্তারা পরীক্ষার্থী ছাত্রছাত্রীদের কথা চিন্তা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।