পশু উৎসর্গ করে শুরু পদ্মার মূল সেতুর কাজ
বহু প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতুর ট্রায়াল পাইল স্থাপনে অ্যাংকর পাইলের কাজ শুরু হয়েছে। আজ রোববার সকাল ৯টা থেকে ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে বিশাল ক্রেনের মাধ্যমে এই অ্যাংকর পাইল স্থাপন করা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়েই মূল সেতু তৈরির প্রাথমিক কাজ শুরু হলো।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানি কাজ শুরুর ক্ষণটিতে দুটি কালো ষাঁড়, দুটি খাসি ও দুটি মোরগ পদ্মা নদীতে উৎসর্গ করে। এ লক্ষ্যে এগুলো জবাই করে বিশেষ কৌশলে রক্তগুলো সরাসরি পদ্মায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়। চীনের রীতি অনুয়ায়ী, কাজের সফলতা ও দুর্ঘটনা রোধে এই পশু উৎসর্গ করা হয়। ষাঁড়ের সামনের দুটি রান অর্থাৎ দুটি গরুর চারটি রান পদ্মা নদীতে উৎসর্গ করে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকি মাংস প্রকল্পে কর্মরতদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
এ ব্যাপারে পদ্মা সেতু প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী দেওয়ান মোহাম্মদ আব্দুল কাদির জানান, মূল সেতুর পাইলগুলো তিন ডায়ামিটারের। তবে টেস্ট পাইলের ক্ষেত্রে দেড় ডায়ামিটার দিয়ে ধারণক্ষমতা দেখা হচ্ছে। সেতু প্রকল্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, পদ্মা সেতুর পিলার থাকবে ৪২টি।
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) জানায়, সকালে পশু উৎসর্গ করার মধ্য দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে কাজ শুরু হয়। এ সময় অ্যাংকর পাইলের কাজের চারিদিকে একের পর এক আতশবাজি ফুটতে থাকলে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। অনুষ্ঠানে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট প্রায় সবাই অংশ নেন। দুই নম্বর পিলারের কাছে নদীতে এই অ্যাংকর পাইল স্থাপন শুরু হয়েছে। এরপরই ২০ মার্চ থেকে ট্রায়াল পাইল স্থাপন করা শুরু হবে।
মূল পাইলের হ্যামারটি পরিদর্শন ও এটি পরিচালনের কৌশল রপ্ত করতে ১৫ মার্চ একটি কারিগরি টিম জার্মানি যাবে। এই টিম সেখানে অন্তত দুই সপ্তাহ প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও হাতে-কলমে খুঁটিনাটি সব বিষয়ে অবগত হবে। এরপরই এপ্রিলে এটি জার্মানি থেকে পাঠানো হবে মাওয়ায়। এ ছাড়া মাওয়ার নির্মাণ এলাকার (কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড) পাশের বিশাল ওয়ার্কশপে মূল পাইল তৈরির প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে, মাওয়া রেস্টহাউস ভাঙা শুরু হয়েছে। মূল সেতুর সংযোগ সেতু নির্মাণের জন্য এই রেস্টহাউসটি স্থানান্তর হচ্ছে পার্শ্ববর্তী শ্রীনগরের দোগাছির সার্ভিস এরিয়া-১ এলাকায়। প্রথম থেকেই পদ্মা সেতু-সংক্রান্ত সব কাজ পরিচালনা ও ভিআইপিদের সভা, ব্রিফিং হয়েছে এই রেস্টহাউসেই।
সেতুর সব কাজ চলছে শিডিউল অনুযায়ী। কর্তৃপক্ষ আশা প্রকাশ করেছে, চার বছরের জন্য ঘোষিত নির্ধারিত শিডিউল অনুযায়ী যথাসময়ে বা আগে পদ্মা বহুমুখী সেতুর কাজ শেষ হবে। ২০১৮ সালের মধ্যে সেতুটি চলাচল উপযোগী করার কথা রয়েছে।