লালমনিরহাটে ধর্ষকের সঙ্গে কিশোরীর বিয়ের ঘটনায় কাজি গ্রেপ্তার
লালমনিরহাট সদর উপজেলায় অভিযুক্তের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার সপ্তম শ্রেণির এক কিশোরীর বাল্যবিবাহ দেওয়ার অভিযোগে কাজিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া শহিদুল ইসলাম (৪৮) উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের সাতপাটকী এলাকার বাসিন্দা। তিনি ওই ইউনিয়নের নিকাহ নিবন্ধক। শুক্রবার রাতে বুড়িরবাজার এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশের সূত্র অনুযায়ী, সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাইনুল ইসলামের পরামর্শে প্রাইভেট শিক্ষক শাহীন আলমের (২৪) সঙ্গে ওই কিশোরীর বিয়ের আয়োজন করা হয়। এ ঘটনায় বুধবার তাঁকে হাতীবান্ধা সার্কেল অফিসে বদলি করা হয়েছে।
কিশোরীর বাবার অভিযোগ অনুযায়ী, সদর উপজেলার শাহীন ওই কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা চালান এবং পরে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। এতে কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে ২৫ জুলাই লালমনিরহাট শহরের একটি ক্লিনিকে তার গর্ভপাত করানো হয়।
কিশোরীর বাবা এ ঘটনায় ১১ আগস্ট সদর থানায় অভিযোগ করলে এসআই মাইনুল কিশোরীকে শাহীনের সঙ্গে বিয়ের পরামর্শ দেন। সে অনুযায়ী ২৩ আগস্ট মহেন্দ্রনগরের কাজি অফিসে তাদের বিয়ে হয়। কিন্তু মেয়ের বয়স কম হওয়ায় বিয়ের প্রমাণ হিসেবে কোনো কাবিননামা করা হয়নি।
কয়েক দিন পর শাহীনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিয়েতে কোনো কাবিননামা সই হয়নি। তাই শাহীনের সঙ্গে ওই কিশোরীর তালাক হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে শাহীন ধর্ষণের অভিযোগও অস্বীকার করেন।
এ ঘটনায় ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে সদর থানায় ওই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে শাহীনসহ চারজনকে আসামি করে মামলা করেন। এ মামলায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে শাহীনকে রাতেই গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজ আলম বলেন, ‘মামলাটি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হচ্ছে। বিয়ে পড়ানোর অভিযোগে কাজি শহিদুলকে শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
এসআই মাইনুলের বিষয়ে সদর সার্কেলের এএসপি শফিকুল ইসলাম জানান, তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এখনই এ ব্যাপারে কিছু বলা সম্ভব নয়।
এদিকে, কাজি শহিদুল থানায় দাবি করে বলেন, ‘আমি এ বিয়ে দেইনি। এমনকি তাদের চিনিও না। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।’