ওয়াগ্যো প্যোয়ে উপলক্ষে নদীতে ভাসল নৌকা, আকাশে উড়ল ফানুস
নানা ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে পালিত হয়েছে প্রবারণা পূর্ণিমা। তিন মাসের বর্ষাবাস শেষে এই উৎসব উদযাপিত হয়। দিনব্যাপী নানা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যায় বিহারগুলোতে মঙ্গল কামনায় ফানুস উড়ানো হয়। সারা দেশের মতো পাহাড়ের চাকমা ও বাঙালি বড়ুয়ারা এই বিশেষ দিনটি উদযাপন করেছে।
তবে একই ধর্মাবলম্বী হলেও অনেকটা ব্যতিক্রমীভাবে মারমা জনগোষ্ঠীর মানুষ আজ ওয়া বা ওয়াগ্যো প্যোয়ে উৎসব পালন করে। সন্ধ্যায় চেঙ্গী নদীতে ভাসানো হয় দৃষ্টিনন্দন দুটি ময়ূর কল্পজাহাজ। বাঁশ, বেত, কাঠ আর রঙিন কাগজ দিয়ে অপূর্ব কারুকাজে তৈরি করা হয় এগুলো। আর ভগবান বৌদ্ধের উদ্দেশে আকাশে আকাশপ্রদীপ (ফানুস) উড়িয়ে এবং নদীতে বাতি ও হাজার প্রদীপ জ্বালিয়ে জগতের সব প্রাণীর মঙ্গল কামনা করা হয়।
এর আগে শহরে একটি র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি শহরের শহীদ কাদের সড়ক হয়ে রাজ্যমনি পাড়ায় গিয়ে শেষ হয়।
বৌদ্ধদের মতে, প্রবারণা হলো আত্মশুদ্ধি ও অশুভকে বর্জন করে সত্য ও সুন্দরকে বরণের অনুষ্ঠান। এ প্রবারণা পূর্ণিমার পরের দিন থেকে এক মাস দেশের প্রতিটি বৌদ্ধবিহারে শুরু হবে শুভ কঠিন চীবর দানোৎসব।
এদিকে ভোর থেকে বুদ্ধপূজা, পঞ্চশীল গ্রহণ, সংঘ দান, অষ্ট পরিষ্কার দান, হাজার বাতি দান ও ধর্ম দেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় প্রবারণার আনুষ্ঠানিকতা। এ সময় জগতের সব প্রাণীর সুখ সমৃদ্ধি কামনা করা হয়।
সকালে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা প্রদীপ প্রজ্বালন, বৌদ্ধ মূর্তি স্নান, ফুল-ফল দিয়ে প্রার্থনা করেন। এ সময় সাধ্যমতো ভান্তেকে ছোয়াইং (খাদ্য) প্রদান করা হয়। আজ থেকে আগামী এক মাস বিহারে বিহারে কঠিন চিবর দানোৎসব অনুষ্ঠিত হবে।