নবীগঞ্জে নির্বাচনে জাল ভোট, আ.লীগের প্রার্থীর জয়
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচনে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, জাল ভোট ও ব্যালট পেপার ছিনতাই, এজেন্ট বের করে দেওয়ার মধ্য দিয়ে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। আজ সোমবার অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও দেবপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মোহিত চৌধুরী জয়ী হয়েছেন।
নৌকা প্রতীক নিয়ে মোহিত চৌধুরী পেয়েছেন চার হাজার ১৩২ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সদ্য প্রয়াত চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাসুম আহমেদ জাবেদের ছেলে শাহ রিয়াজ নাদির সুমন চশমা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন তিন হাজার ৩৮২ ভোট। তৃতীয় হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আ ক ম ফখরুল ইসলাম কালাম। আনারস প্রতীক নিয়ে তাঁর প্রাপ্ত ভোট দুই হাজার ৮০১। বিএনপির অ্যাডভোকেট জালাল আহমদ ঘোড়া প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৬৮১ ভোট ও মাওলানা ফখরুল ইসলাম চৌধুরী মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৪২১ ভোট।
এদিকে নির্বাচনী ফলাফলকে ব্যালট পেপার ছিনতাই, টেবিল কাস্ট ও বিভিন্ন কারচুপি ও এজেন্ট বের করে দেওয়ার অভিযোগ এনে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন প্রার্থী শাহ রিয়াজ নাদির সুমন, আ ক ম ফখরুল ইসলাম কালাম ও অ্যাডভোকেট জালাল আহমদ।
এদিকে বিকেল ৪টার দিকে দেবপাড়া (বাজার) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে যুবলীগ-ছাত্রলীগের একদল কর্মী ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করে জোর করে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নৌকা প্রতীকে সিল দেয়। এ সময় চশমা প্রতীকের এজেন্ট হাসিনা পারভিন ৩৩টি ব্যালট পেপারসহ একটি মুড়ি বই আটক করে। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হলে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। নবীগঞ্জ-বাহুবল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পারভেজ আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।
এর আগে দুপুর ১২টায় উত্তর দেবপাড়া হাজী মনির আহমেদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চশমা প্রতীকের এজেন্ট ফখরুল ইসলামকে একটি কক্ষে আটক করে প্রিজাইডিং অফিসার আবদুস সালামের সহযোগিতায় ব্যালটে সিল দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। এ ছাড়া আইনগাঁও দাখিল মাদ্রাসা ও ফরিদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়।
এর আগে সোমবার সকাল ৯টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে। সকাল থেকে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। দেবপাড়া ইউনিয়নের মোট ভোটার ১৮ হাজার ৩০৫ জন। মোট ভোটকেন্দ্র নয়টি। এর মধ্যে ছয় কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে এসআই ও ১৫ জন পুলিশ, ১৪ জন আনসার সদস্য, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে তিনটি মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত ছিল।
২০১৬ সালের ২৮ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়ী চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাসুম আহমেদ জাবেদ আলীর মৃত্যুতে চলতি বছরের ১৭ জুলাই চেয়ারম্যান পদ শূন্য ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি হয়।