নরসিংদীতে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়কারী দলের চার সদস্য গ্রেপ্তার
নরসিংদীতে মহাসড়কে চলন্ত বাসে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়কারী দলের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল শনিবার দিনব্যাপী গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে শহরের ভেলানগর, পাঁচদোনা ও মাধবদী থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মাধবদীর আসমান্দীরচর গ্রামের জাকির হোসেন, কাকশিয়া গ্রামের মো. শাহজালাল, পাঁচদোনা এলাকার রানা মিয়া ও স্বর্পনিগর গ্রামের আবু তাহের।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা সবাই পেশাদার মুক্তিপণ আদায়কারী দলের সদস্য। তাদের একটি মিনিবাস রয়েছে। তারা সেই বাসের সাহায্যে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীর অংশে যাত্রীদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে। গত ১৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার মাধবদী জজ ভূইয়া স্পিনিং মিলের সিনিয়র প্রোডাকশন অফিসার হাবীবুর রহমান অফিস শেষে নরসিংদী ফিরছিলেন। পথে ভেলানগর বাসটি এসে থামলে অপহরণকারীদের আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা কয়েকজন তাকে কৌশলে নামতে বাধা দেয়। বাসের সব যাত্রী নেমে গেলে সঙ্গে সঙ্গে বাসটি পাঁচদোনার দিকে দ্রুত গতিতে যেতে থাকে। এরই মধ্যে অপহরণকারীরা তার চোখ বেঁধে ফেলে ভয়ভীতি দেখায়। সুবিধামত জায়গায় নিয়ে তার সঙ্গে থাকা নগদ ১০ হাজার টাকা ও একটি ওয়ালটন মোবাইল হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে তাকে শারীরিক নির্যাতন করে তাঁর স্ত্রীর কাছে ফোন দিয়ে একলাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তাঁর স্ত্রী কামরন্নাহার খুশি পুলিশ সুপারকে জানালে তিনি গোয়েন্দা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। পরে গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে পাঁচদোনা থেকে হাবীবুর রহমানকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় শুক্রবার হাবীবুর রহমান অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে নরসিংদী মডেল থানায় মামলা করেন।
পরে শনিবার বিকেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গোয়েন্দা পুলিশ শহরের ভেলানগর মোড়ে অভিযান চালিয়ে শাহজালাল ও আবু তাহেরকে গ্রেপ্তার করে। রাতে আসমান্দীরচর থেকে জাকিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। সর্বশেষ শনিবার দিনগত রাতে মাধবদী থেকে রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নরসিংদী গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক জাকারিয়া রতন বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা পেশাদার। তাদের নামে নরসিংদীসহ বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, ছিনতাই, অপহরণ, চুরিসহ বিভিন্ন আইনে মামলা আছে। এছাড়াও এজাহারভুক্ত দুইজন আসামি এখনো পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’