লালমনিরহাট জেলাকে বাল্যবিবাহমুক্ত ঘোষণা
উত্তরের জেলা লালমনিরহাটকে বাল্যবিবাহমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে হাতীবান্ধা এসএস মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা প্রশাসন আয়োজিত গণসমাবেশ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা প্লান ইন্টারন্যাশনাল ও রূপান্তরের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘লালমনিরহাটের আর একটি শিশুও বাল্যবিবাহের শিকার হবে না। অতীতে এই জেলা নিরক্ষরমুক্ত হয়েছে। এরপর শতভাগ স্যানিটেশন নিশ্চিত হয়েছে। এ সাফল্যের ধারাবাহিকতায় আজ থেকে এ জেলা শিশুবিবাহমুক্ত ঘোষণা করা হলো।’
সমাবেশে জেলার সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক নেতাসহ বিভিন্ন পেশাজীবী উপস্থিত ছিলেন।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে গণসমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হুমায়ুন খালিদ, রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার দিলওয়ার বখ্ত, লালমনিরহাটের জেলা ও দায়রা জজ মিঞা মুহা. আলী আকবার আজিজী, পুলিশ সুপার টি এম মুজাহিদুল ইসলাম, হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন বাচ্চু, অধ্যক্ষ সারওয়ার হায়াত খান, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কর্মকর্তা দেবাশীষ সাহা, হাতীবান্ধা উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক মাহমুদুল হাসান সোহাগ, সিংঙ্গীমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এম জি মোস্তাফা, শিশু ফোরামের সভাপতি শিরিনা খাতুন ও কালীগঞ্জের মদাতী ইউপির চেয়ারম্যান আবদুল কাদের।
গণসমাবেশের শেষ পর্যায়ে লালমনিরহাট জেলাকে বাল্যবিবাহমুক্ত ঘোষণার অংশ হিসেবে কালীগঞ্জ কেইউপি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খুরশীদুজ্জামান আহম্মেদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধিসহ সবাইকে বাল্যবিবাহ বন্ধে শপথবাক্য পাঠ করান।
জানা গেছে, বেশকিছু দিন ধরে জেলার হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারীসহ পুরো জেলায় বাল্যবিবাহ বন্ধে ব্যাপক তৎপরতা শুরু করে প্রশাসন। বর, বরের বাবা, কনের বাবা, নিকাহ রেজিস্ট্রারসহ সংশ্লিষ্টদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডাদেশ ও জরিমানা অব্যাহত থাকায় জেলায় বাল্যবিবাহ অনেকটা কমে আসে। এরই ধারাবাহিকতায় লালমনিরহাট জেলাকে আজ বাল্যবিবাহমুক্ত ঘোষণা করা হলো।
এর আগে আনুষ্ঠানিকভাবে হাতীবান্ধা উপজেলা ও কালীগঞ্জের মদাতী ইউনিয়নকে বাল্যবিবাহমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল।