শতবর্ষে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ। শৈল্পিক কারুকাজের দৃষ্টিনন্দন এই ব্রিজ শুধু পাবনা নয়, বরং গোটা বাংলাদেশের গৌরব আর অহংকারের প্রতীক হিসেবে আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী হয়ে।
পদ্মা নদীর ওপর স্থাপিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বহনকারী ঐতিহ্যবাহী এই রেলসেতু চালুর ১০০ বছর পূর্তি আজ। ব্রিটিশ স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন ও এশিয়ার অন্যতম এই রেলসেতুর শতবর্ষ পূর্তির সাক্ষী হতে পেরে আনন্দিত পাবনাবাসী। দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে আয়োজন করা হয়েছে নানা অনুষ্ঠানের।
অবিভক্ত ভারতের কলকাতার সঙ্গে আসাম ও পূর্ব বাংলার রেল যোগাযোগব্যবস্থা সহজ করতে ১৮৮৯ সালে পদ্মা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় ব্রিটিশ সরকার। দীর্ঘ ২০ বছর আলোচনার পর ১৯০৮ সালে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। এর পর ১৯১০ সালে ২৪ হাজার লোকবল নিয়ে পদ্মা নদীর ওপর রেলসেতুর নির্মাণকাজ শুরু করা হয়।
১৯১৫ সালে চার কোটি ৭৫ লাখ ৫০ হাজার ভারতীয় রুপি ব্যয়ে শেষ হয় এই সেতুর নির্মাণকাজ। ১ দশমিক ৮১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রেলসেতুটির অর্ধেক অংশ পাবনার পাকশীতে এবং বাকি অংশ পড়েছে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায়। এই রেলসেতুর ভারবহন ক্ষমতা এক হাজার ৯২৭ টন।
একই বছরের ৪ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের মাধ্যমে সেতুর উদ্বোধন করেন তৎকালীন ভারতের গভর্নর জেনারেল ভাইসরয় লর্ড চার্লস হার্ডিঞ্জ। তাঁর নামেই এ সেতুর নামকরণ করা হয় হার্ডিঞ্জ ব্রিজ।
সেতু নির্মাণের প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন ব্রিটিশ প্রকৌশলী রবার্ট গেইল্স। শৈল্পিক কারুকার্যখচিত ঐতিহ্যময় হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ১০০ বছর ধরে পর্যটকদের আকৃষ্ট ও মুগ্ধ করে চলেছে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ চলার সময় সেতুর ১২ নম্বর স্প্যান মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর পর প্রায় ১১ মাস সেতুতে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। মেরামতের পর আবারও রেল যোগাযোগ চালু হয়।