ইলিশের অভয়াশ্রমে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জাটকা শিকার
শরীয়তপুরে পদ্মা নদীতে ২০ কিলোমিটার এলাকা ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়েছে। ১ মার্চ হতে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এ এলাকার নদীতে জাল ফেলা নিষেধ। অথচ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশের অভয়াশ্রমে অবাদে চলছে জাটকাসহ (ছোট ইলিশ) বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শিকার।
শরীয়তপুর জেলা মৎস্য কার্যালয় জানিয়েছে, মার্চ - এপ্রিল দুই মাস ইলিশসহ সকল ধরনের মাছের বেড়ে ওঠার সময়। এছাড়া এ সময় নদীতে কয়েকটি প্রজাতির মাছ ডিম ছাড়ে। এজন্য শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ওয়াপদা হতে ভেদরগঞ্জ উপজেলার উত্তর তারাবনিয়া পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার এলাকা ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়েছে। ইলিশের অভয়াশ্রমে এ সময় সকল ধরনের জাল ফেলা নিষেধ। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নড়িয়া উপজেলার ওয়াপদা,চন্ডিপুর,সুরেশ্বর,বীরমইশাল,চরমোহন,মনিরাবাদ,ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাচিকাটা,চরভাঘা,গৌরঙ্গবাজার,দুলারচর ও স্টেশন বাজার এলাকায় অবাধে মাছ শিকার করা হচ্ছে। যার অধিকাংশই জাটকা। এসব জাটকা বিক্রির জন্য নৌ পথে ট্রলার যোগে ঢাকার বিভিন্ন বাজারে নেয়া হচ্ছে।
নভেম্বর হতে জুন পযর্ন্ত ২৫ সেন্টিমিটারের নিচে ইলিশ মাছ শিকার করা নিষেধ। মৎস্য সংরক্ষণ আইনে এ সময় জাটকা আহরণ,পরিবহন ও বিপনন করলে এক হতে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে।
জাটকা শিকার বন্ধ রাখার জন্য সরকার মৎস্যজীবীদের উদ্যোগ নিয়েছে। মার্চ হতে জুন পর্যন্ত প্রতি পরিবারকে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা রয়েছে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় হতে ১৬ হাজার ২২৬ জন মৎস্যজীবীর নামের তালিকা অনুমোদনের জন্য ত্রাণ মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে।
নড়িয়া উপজেলার চরমোহন গ্রামের জেলে আবুল হাসেম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘নদীতে মাছ শিকার করা ছাড়া আমাদের আর কোন পেশা নেই। মাছ শিকার করে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালাতে হয়। তাই নিষেধাজ্ঞার সময়ও আমাদের জাল নিয়ে নদীতে নামতে হয়।’
ভেদরগঞ্জ উপজেলার দুলারচর গ্রামের জেলে খবির উদ্দিন বলেন, ‘বছরের অধিকাংশ সময় নদীতে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকে। বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা না থাকাতে আমরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকার করছি।’
শরীয়তপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো.মহসিন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘মার্চ মাস হতে চার মাস পর্যন্ত জেলেদের চাল দেয়া হবে। জাটকা শিকার ও বিক্রি বন্ধের জন্য নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। প্রতি দিনই জেলেদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। তারপরও জাটকা শিকার বন্ধ করা যাচ্ছে না।’