নরসিংদীতে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ
নরসিংদী পৌরসভা নির্বাচনের প্রচারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও এর বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে কমপক্ষে চারজন আহত হয়েছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় এ ঘটনার পর থেকেই এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে দলটি থেকে মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল ও বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম কাইয়ুমের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর পর থেকে উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগের সামনে কামরুজ্জামান কামরুলের উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেনের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম কাইয়ুমের সমর্থকরা মোবাইল প্রতীকের মিছিল বের করে। মিছিলটি আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে পৌঁছালে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছেন শহর আওয়ামী লীগের সদস্য জামান মিয়া, নরসিংদী সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক তন্ময় দাস তনু, শ্রমিক নেতা ইয়াকুব রানা ও সুমন মিয়া। এঁদের মধ্যে জামান আওয়ামী লীগের প্রার্থী কামরুলের সমর্থক। বাকিরা স্বতন্ত্র প্রার্থী কাইয়ুমের সমর্থক। আহতদের নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
কামরুজ্জামান কামরুলের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামীম নেওয়াজ বলেন, বৈঠক চলাকালে স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম কাইয়ুমের নেতৃত্বে ২৫ থেকে ৩০ জনের একদল লোক হামলা চালায়। এতে শহর আওয়ামী লীগ নেতা জামানসহ কমপক্ষে ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম কাইয়ুম বলেন, সকাল থেকেই তিনি শহরের ভেলানগর এলাকায় গণসংযোগ করেছেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত তিনি সেখানেই ছিলেন। তাহলে তাঁর নেতৃত্বে কীভাবে হামলা হয়েছে? তিনি দাবি করেন, তাঁর সমর্থকরা গণসংযোগ করার সময় প্রার্থী কামরুলের কর্মী জামানের নেতৃত্বে একদল ব্যক্তি চেয়ার নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে শ্রমিক নেতা ইয়াকুব ও সুমন আহত হন। তাঁদের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে সেখানে আবারো কামরুলের সমর্থকরা হামলা চালিয়ে ছাত্রলীগ নেতা তনুকে আহত করেছে।
নরসিংদী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম বলেন, এক প্রার্থীর সভার পাশ দিয়ে আরেক প্রার্থী মিছিল করায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তনু নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শহরের বিশেষ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সুরাইয়া বেগম বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী উঠান বৈঠকের নামে জনসভা করেছেন। খবর পেয়ে ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে গিয়ে জনসভা বন্ধের নির্দেশ দেন। একই সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী কাইয়ুমের কয়েক হাজার সমর্থক মিছিল নিয়ে সভা অতিক্রম করার সময় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে উভয় প্রার্থীকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হচ্ছে।