খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার প্রতিবাদে দেশের কয়েকটি স্থানে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। আজ বুধবার সকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও নরসিংদীতে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়।
সাভার থেকে আমাদের সিনিয়ন স্টাফ করেসপন্ডেন্ট জাহিদুর রহমান জানান, সকালে জাহাঙ্গীরনগর (জাবি) ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানার নেতৃত্বে মিছিল-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের চৌরঙ্গী মোড় থেকে শুরু হয়ে জাবি স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে গিয়ে শেষ হয়।
মিছিল-পরবর্তী সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাসহ সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি করেন। সেই সঙ্গে ষড়যন্ত্রমূলক সমন জারির তীব্র নিন্দা জানান তাঁরা।
আমাদের নরসিংদী প্রতিনিধি বিশ্বজিৎ সাহা জানান, মানববন্ধন, প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। সকালে জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট বাছেদ ভুঁইয়ার নেতৃত্বে নরসিংদী প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করা হয়।
পরে নরসিংদী প্রেসক্লাবের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।
এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে আমাদের সংবাদদাতা জানান, বুধবার সকালে ঢাবি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আলমগীর হাসান সোহানের নেতৃত্বে মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি দোয়েল চত্বর থেকে শুরু হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়। মিছিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেন।
মিছিল শেষে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আলমগীর হাসান সোহান। তিনি খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যে কোনো হীন ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার জন্য ছাত্রসমাজের প্রতি আহ্বান জানান।
মিছিলে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পদক মির্জা ইয়াসিন আলী, অর্থ সম্পাদক মোস্তাফিজুর মোস্তাক, সহসাংগঠনিক সম্পাদক উজ্জল হোসেন, সাবেক সদস্য আবু ফয়সাল জিয়াদ, ঢাবি ছাত্রদল নেতা হাফিজুর রহমান হাফিজ, ইমরান হোসেন, আলমগীর কবির প্রমুখ।
গত ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মুক্তিযোদ্ধাদের এক সমাবেশে খালেদা জিয়া বলেন, মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে। তিনি বলেন, ‘আজকে বলা হয়, এত লাখ লোক শহীদ হয়েছে। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে।’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম উল্লেখ না করে খালেদা জিয়া দাবি করেন, তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি। তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে মুক্তিযুদ্ধ হতো না।
এরপর ২৩ ডিসেম্বর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বক্তব্যে ‘দেশদ্রোহী’ মনোভাব পাওয়া যাচ্ছে অভিযোগ করে তা প্রত্যাহার করতে উকিল নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক মোমতাজ উদ্দিন আহমদ। নোটিশের জবাব না পাওয়ায় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৬ ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা অনুমোদনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানান তিনি।
চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অনুমোদন দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গতকাল সোমবার বিএনপির চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করে আগামী ৩ মার্চ তাঁকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন ঢাকা মহানগর হাকিম রাশেদ তালুকদার।