‘প্রেমিক’ খুন, কবরস্থান থেকে আসামি গ্রেপ্তার
নরসিংদীতে কিশোর ‘প্রেমিক’ জায়েদুল ইসলামকে (১৭) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রুবেল নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ রোববার ভোর ৪টার দিকে শহরের গাবতলী কবরস্থান থেকে গ্রেপ্তারের সময় রুবেলের কাছ থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।
রুবেল স্থানীয়ভাবে ‘কুত্তা রুবেল’ নামে পরিচিত বলে পুলিশ জানিয়েছে। অভিযানের সময় পুলিশের সঙ্গে গুলিবিনিময়ের সময় রুবেল গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে প্রথমে জেলা হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, কিশোর জায়েদুলকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় তার চাচা তোফাজ্জল হোসেন বাদী হয়ে শনিবার রাতে নরসিংদী সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় রুবেলকে প্রধান আসামি করে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫ জনের বিরুদ্ধে এই মামলাটি করা হয়েছে।
রাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) হাসিবুল আলমের নেতৃত্বে সদর মডেল থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি যৌথ দল রুবেলকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালায়। ভোর ৪টার দিকে পুলিশ গাবতলী কবরস্থান এলাকায় রুবেলের সন্ধান পায়। কিন্তু পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে রুবেল পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে রুবেলের পায়ে গুলি লাগে। ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশীয় অস্ত্র ও দুটি গুলি উদ্ধার করে পুলিশ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) হাসিবুল আলম বলেন, ‘কুত্তা রুবেল শহরের শীর্ষস্থানীয় সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, মাদকসহ বিভিন্ন আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। সে জায়েদুল হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা। তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে হত্যায় জড়িত বাকিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
গত শনিবার বিকেলে সদর উপজেলার গাবতলী মাদ্রাসা এলাকায় কাঠবাগানের ভেতরে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে হত্যা করে জায়েদুল ইসলামকে। হামলায় মিতু আক্তার ও জয় মিয়া নামের দুই কিশোর-কিশোরী আহত হয়।
নিহত জায়েদুল ও আহত মিতু প্রেমিক-প্রেমিকা বলে জানিয়েছে আহত জয়। তবে এ ব্যাপারে কোনো তথ্য দেয়নি রায়পুরা উপজেলার নিলক্ষ্যা ইউনিয়নের বাসিন্দা কিশোরী মিতু। সে জানায়, গত শুক্রবার নিহত জায়েদুল ইসলামের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। চাকরি দেওয়ার আশ্বাসে জায়েদুলের চাচির বাড়িতে রাতে থাকে মিতু। শনিবার দুপুরে গাবতলী এলাকার কাঠবাগানে সে, জায়েদুল ও জয় কথা বলছিলেন। কথোপকথনের সময় ১০-১২ জন সন্ত্রাসী এসে তাঁদের ওপর হামলা চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই জায়েদুল নিহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে ও জয়কে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর ও জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়।
তবে পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার গাবতলীর কাঠবাগানে মেয়েটিকে প্রথমে কুপ্রস্তাব দেয় রুবেল। এতে মেয়েটি রাজি না হলে তাকে তুলে নিতে চাইলে সঙ্গে থাকা দুই কিশোর তাদের বাধা দেয়। একপর্যায়ে রুবেল তাদের এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে এবং জায়েদুলকে জবাই করে ফেলে রেখে যায়।