প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা সন্তু লারমার
জাতীয় সংসদে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু)।
সন্তু লারমা বলেছেন, ১০ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী সংসদে যে ভাষণ দিয়েছেন, সেই ভাষণ আপনারা পড়বেন। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী, তিনি যদি এমন ভাষণ দিতে পারেন, তাহলে বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠীর অন্তরে কী নিহিত আছে, জুম্ম জনগণকে কী করতে হবে, সেটি ছাত্র ও যুব সমাজকে অনুধাবন করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ইনস্টিটিউটে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের রাঙামাটি জেলা শাখার ১৮তম কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সন্তু লারমা।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি অন্তিক চাকমার সভাপতিত্বে এতে দেন জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রচার সম্পাদক মঙ্গল কুমার চাকমা, ছাত্র ও যুব সংগঠক ত্রিজিনাথ চাকমাসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।
সন্তু লারমা আরো বলেন, ‘শাসকগোষ্ঠী চায় আমাদের বিলীন করতে, তাই তারা চুক্তি বাস্তবায়ন হতে দিচ্ছে না। আজকে পার্বত্যাঞ্চলে ক্রমাগত বহিরাগত অনুপ্রবেশ হচ্ছে এবং ভূমি বেদখল হচ্ছে, সে কারণে আমরা আরো প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছি।’
সন্তু লারমা চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলন জোরদারে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘শিক্ষার উদ্দেশ্য কখনই ব্যক্তিগত সুখ বা আয়েসি জীবনযাপন হতে পারে না। আমরা মনে করি শিক্ষা শেষে চাকরি নিয়ে নিজের মতো জীবন কাটাব, এ ধারণা থেকে বের হয়ে এসে, নিজের জাতির অধিকার আদায়ের আন্দোলনে আত্মনিয়োগ করতে হবে। কারণ জাতিই যদি না থাকে, তাহলে ব্যক্তি কখনো ভালো থাকতে পারে না।’
জেএসএসের চলমান অসহযোগ আন্দোলন সম্পর্কে সন্তু লারমা বলেন, ‘আমাদের চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলন চলছে, এ আন্দোলনকে আরো বেগবান করতে হবে। সে দায়িত্ব এই ছাত্র সমাজকেই পালন করতে হবে।’ যেকোনো ধরনের কর্মসূচি সফল করার জন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান জনসংহতি সমিতির প্রধান এই নেতা।
জুম্মদের জাতীয় রাজনীতি প্রসঙ্গে সন্তু লারমা বলেন, ‘দীপংকর তালুকদার-বীর বাহাদুরদের মতো গুটি কয়েক জুম্ম, যারা আওয়ামী লীগের লেজুড়বৃত্তি, তোষামদি করে চুক্তি বাস্তবায়নে বিরোধিতা করছে- তাদের সেই অপকর্ম থেকে সরিয়ে আনতে হবে। তারা যদি আসতে না চায়, তবে তাদের সরে আসতে বাধ্য করার মতো কাজটাও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদকেই করতে হবে।’