রায়গঞ্জে আ. লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, গোলাগুলি
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের ব্রহ্মগাছা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী গোলাম সরোয়ার লিটন ও ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ বর্তমান চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন নাজিরের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় গুলিবিদ্ধসহ ১০ জন আহত হয়েছেন।
আজ বুধবার দুপুরে উপজেলার ব্রহ্মগাছা ইউনিয়নের ভাতহারিয়া বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বেশ কয়েকটি রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পুলিশের গুলি ও দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে ১০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গোলাম ও হেলাল নামে দুজনকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রায়গঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল ইসলাম বিশ্বাস জানান, আওয়ামী লীগ প্রার্থী গোলাম সরোয়ার লিটনের সমর্থনে ইউনিয়ন যুবলীগকর্মীরা ভাতহাড়িয়া হাইস্কুল মাঠে নির্বাচনী সমাবেশের জন্য মঞ্চ তৈরি করছিল। এ সময় বিদ্রোহী প্রার্থী নাসিরের সমর্থকরা মঞ্চ তৈরি করতে বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় ১০টি রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
তবে স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম ও বাবলু শেখ জানান, বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক ও বর্তমান চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন নাজির বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সমাবেশ করতে নিষেধ করেন। তখন ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছানোয়ার হোসেন বাবু ও আওয়ামী লীগ প্রার্থী লিটনের ছোট ভাই টিটুর নেতৃত্বে তিন থেকে চারশ লোক শিক্ষকদের ওপর হামলা করে। এতে বাধা দিতে গেলে ভাতহাড়িয়া গ্রামের লোকজনের ওপরও তারা হামলা চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তারা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
বিদ্রোহী প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন নাজির জানান, তিনি স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। তাই স্কুল বন্ধ রেখে সভা করতে নিষেধ করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে লিটনের সমর্থক যুবলীগকর্মীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। পরে পুলিশ এসেও তাদের দিকে রাবার বুলেট ছুড়তে থাকে।
নাসির উদ্দিন বলেন, ‘হামলা ও পুলিশের গুলিতে ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি গোলাম হোসেন, ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি সৈকত হাসান ফাত্তা, আমার স্ত্রী রীনা খাতুন, ভাবী লতিফা বেগম, সাইদ, আব্দুল গাফ্ফার, হেলাল উদ্দিন, বেলাল হোসেন, মজিদ ও আয়নাল উদ্দিনসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হন।’
নাসির উদ্দিন নাজির আরো জানান, এছাড়া স্কুলের শিক্ষক ও ছাত্রদের মারপিট করা হয়েছে। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গোলাম ও হেলালকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অপরদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী গোলাম সরোয়ার লিটন জানান, ইউনিয়ন যুবলীগ স্কুলে সমাবেশের আয়োজন করেছিল। এ সময় নাজিরের উদ্দিনের লোকজন সমাবেশ পণ্ড করতে হামলা চালায় এবং তাঁর সমর্থকদের মারপিট করে। তবে ঘটনাস্থলে তিনি ছিলেন না। এ জন্য বিস্তারিত বলতে পারছেন না।
সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আকরামুজ্জামান জানান, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুজন ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে মাথায় গুলিবিদ্ধ হেলালের অবস্থায় আশঙ্কাজনক।