ইউপি নির্বাচন : এমপি আরজুর বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ
পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) খন্দকার আজিজুল হক আরজুর বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি সব সরকারি সুবিধা নিয়ে এলাকায় পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন বলেও বিভিন্ন দলের নেতারা অভিযোগ করেছেন।
এদিকে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে নির্বাচন কমিশন এমপি আরজুকে এলাকা ত্যাগ করার নির্দেশ দিলে মঙ্গলবার রাতেই তিনি ঢাকায় যান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২২ মার্চ প্রথম ধাপে পাবনার বেড়া উপজেলার নয়টি ইউপির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নয়টি ইউপির মধ্যে পাঁচটি ইউপি পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজুর নির্বাচনী এলাকায়। এগুলো হলো ঢালারচর, মাসুমদিয়া, পুরান ভারেঙ্গা, জাতসাখিনী ও রূপপুর ইউপি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ আবদুল বাতেন ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন কমিটি স্বাক্ষর করে এই পাঁচ ইউনিয়নে তৃণমূলের ভোটে বিজয়ী পুরান ভারেঙ্গা ইউপিতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাশেম, ঢালারচর ইউপিতে কোরবান আলী সরদার, মাসুমদিয়া ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম নেতা শহিদ, রূপপুরে বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নুরু মোল্লা এবং জাতসাখিনীতে মিজানুর রহমান রানার নাম কেন্দ্রে পাঠান।
অপরদিকে পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজু ঢালারচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির হোসেন, মাসুমদিয়া ইউনিয়নে মিরোজ হোসেন, রূপপুরে আবুল হাশেম উজ্জ্বল, জাতসাখিনী ইউনিয়নে রেজাউল হক বাবু এবং পুরান ভারেঙ্গায় এ এম রফিকুল্লাহর নাম কেন্দ্রে পাঠান।
কেন্দ্র থেকে ঢালারচর বাদে অপর চারটি ইউনিয়নে পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজুর দেওয়া তালিকা অনুযায়ী দলীয় মনোনয়ন এবং দলীয় প্রতীক নৌকা বরাদ্দ দেন। তবে ঢালারচরে এমপি মনোনীত নাসির উদ্দিন বিদ্রোহী প্রার্থী থেকে যান।
অন্য চারটির মধ্যে শুধু রূপপুর ইউনিয়নে নুরু মোল্লা বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে থাকেন। অন্যরা নৌকা প্রতীকের সমর্থনে তাঁদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন।
বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বেড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল কাদের অভিযোগ করেন, সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজু ঢালারচরে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নাসির উদ্দিন, জাতসাখিনীতে বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ মানিকের পক্ষে কাজ করছেন। এই দুটি ইউনিয়নে নৌকাকে পরাজিত করতে তিনি মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
অপরদিকে বিএনপিসহ অন্য দলের প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন, সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজু নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন করে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে ভোট চাইছেন।
এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার বাড়ি জাতসাখিনী ইউনিয়নের নাটিয়াবাড়ী। আমি আমার বাড়ি যেতে পারব না! আমি কোনো প্রার্থীর পক্ষে প্রচার চালাইনি। আর এমপিরা দলীয় মনোনয়নের কোনো তালিকা দিতে পারে না। তাই আমার নিজস্ব কোনো প্রার্থী নেই। আওয়ামী লীগের প্রার্থীরাই আমার প্রার্থী।’
আগামী ২২ মার্চ প্রথম ধাপে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গের অভিযোগে নির্বাচন কমিশন (ইসি) এমপি আরজুকে এলাকা ত্যাগ করার নির্দেশ দিলে তিনি মঙ্গলবার রাতেই ঢাকায় যান। তবে খন্দকার আরজু বলেন, তিনি ইসির কোনো নির্দেশনা পাননি। তবে লোকমুখে শুনেছেন যে ইসি তাঁকে এলাকা ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছেন।