নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে কেঁদে ফেললেন বিএনপি প্রার্থী
নির্বাচনের আগের দিন ভোট ডাকাতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেছে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বিএনপি প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান লাল মিয়া।
আজ সোমবার বিকেলে পলাশের গজারিয়া ইউনিয়নের জয়পুরা গ্রামে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন লাল মিয়া।
প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের অংশ হিসেবে প্রথম দফায় পলাশের ডাঙ্গা ও গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল মঙ্গলবার ২২ মার্চ।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির প্রার্থী পলাশ উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি, টানা তিনবারের ইউপি চেয়ারম্যান লাল মিয়া বলেন, ‘ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে যারা আমার কর্মী-সমর্থক তাদের প্রতিনিয়ত হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে ও মারধর করা হচ্ছে। গতকাল রোববার রাতে নৌকার সমর্থকরা আমার বাড়িসহ কর্মী-সমর্থকদের বেশ কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালায়। আমার কর্মীদের ফোন নম্বর জোগাড় করে মোবাইলে হুমকি দেওয়া হয়। এরই মধ্যে আমার অনেক নেতাকর্মী অব্যাহত হামলা-মামলার ভয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। একই সঙ্গে এজেন্টদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’
লাল মিয়া বলেন, ‘পাশের শিবপুর ও নরসিংদী সদর উপজেলার পাশাপাশি পলাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক বহিরাগতদের দিয়ে ভোটকেন্দ্রগুলো দখলে নেওয়ার নীলনকশা করা হয়েছে। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা প্রচার করছে, সকাল ১০টার পর কোনো ভোট বাকি থাকবে না। ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে নিষেধ করা হচ্ছে। ভোট না দিলেও নৌকা প্রতীক বিজয়ী হবে।’
বিএনপি নেতা লাল মিয়া বলেন, ‘আমার ধারণা ছিল ইউপি নির্বাচনের প্রথম ধাপটি সুষ্ঠু হবে। কিন্তু বাস্তবে আমাদের চিন্তা আর চলমান বাস্তবতা এক নয়। প্রশাসনের কাছে যে রকম সহযোগিতা প্রত্যাশা ছিল, তা আমি পাইনি। প্রশাসন নৌকা প্রতীকের পক্ষ নিয়ে কাজ করছে। এ সরকারের আমলে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় বিধায় আমি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিচ্ছি।’
ইউপি নির্বাচন দলীয় প্রতীকে দেওয়া ঠিক হয়নি বলে মনে করেন লাল মিয়া। তিনি বলেন, এ কারণে নির্বাচনে হিংসা, বিদ্বেষ ও অপ্রীতিকর ঘটনা বেড়েছে। জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিরা নির্বাচনে মূল্যায়িত হচ্ছে না। তাই তিনি সরকারের কাছে আগামী নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবস্থা বাতিলের দাবি জানান।
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে গজারিয়া ইউপির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরুজ্জামান ভূঞা বলেন, ‘জনগণ তাঁকে (লাল মিয়া) প্রত্যাখ্যান করেছে। একই সঙ্গে দলীয় নেতাকর্মীও পাশে নেই। তাই নিশ্চিত পরাজয় জেনে মিথ্যা অভিযোগ তুলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছে।’
লাল মিয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা ফারিজা নূর সাংবাদিকদের জানান, ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত যে অভিযোগগুলো এসেছে তা গুরুত্বসহকারে দেখা হয়েছে।