রায়পুরে আ .লীগের চাপে বিএনপির নেতাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় আজ বুধবার বিএনপি মনোনীত তিন ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীকে চাপ দিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করানোর অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের মধ্যে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও চরমোহনা ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্থী নাজমুল ইসলাম মিঠুকে অপহরণ করে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়। এ ছাড়া আরো আটজন চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
বিএনপি নেতাদের ভাষ্যমতে, আজ দুপুর আড়াইটার দিকে বাড়ির সামনে থেকে বিএনপি নেতা নাজমুল ইসলাম মিঠুকে জোর করে একটি কালো রঙের মাইক্রোবাসে তোলা হয়। গাড়িতে থাকা মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা মারধর করে তাঁর কাছ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহারের কাগজে জোর করে স্বাক্ষর নেয়। পরে তাঁকে অচেতন অবস্থায় এক ঘণ্টা পর রায়পুর-লক্ষ্মীপুর সড়কের রাখালিয়ার চালতাতলী এলাকায় রাস্তার পাশ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁকে লক্ষ্মীপুর সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দায়ী করা হয়। তবে আওয়ামী লীগ নেতারা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, ২৩ এপ্রিল তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে রায়পুর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন রয়েছে। এসব ইউনিয়নে চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময় ছিল আজ বুধবার (৬ এপ্রিল) বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থী আবদুল মান্নান সরকার, দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নে হারুনুর রশিদ হাওলাদার ও চরমোহনা ইউনিয়নে নাজমুল ইসলাম মিঠু মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এ ছাড়া আটজন চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগদলীয় নেতাকর্মীদের চাপের মুখে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছেন।
রায়পুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, অপহরণ করে মনোনয়ন প্রত্যাহারের আবেদনে মিঠুর স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভয়ভীতি দেখিয়ে বাধ্য করার কারণে বিএনপির আরও দুজন চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র ইসমাইল খোকন বলেন, মিঠুর ঘটনার সঙ্গে আওয়ামী লীগের একজন নেতাকর্মীও জড়িত নেই। রাজনীতিতে টিকে থাকতে তিনি অপহরণ নাটক সাজিয়েছেন। মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে কাউকে চাপ দেওয়া হয়নি। ভোট করবে না, বিধায় কিছু প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লোকমান হোসেন বলেন, খবর পেয়ে অচেতন অবস্থায় মিঠুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নাছির উদ্দিন বলেন, চেয়ারম্যান পদে ১১ জন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। চাপ প্রয়োগ করে কোনো প্রার্থীকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করার বিষয়ে কেউ জানায়নি। এ ছাড়া উত্তর চরবংশী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী ছাড়া অন্য কেউ নেই। ওই ইউনিয়নে সদস্য পদেও একজন করে প্রার্থী রয়েছে। এতে সেখানে নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনের প্রয়োজন নেই।