লক্ষ্মীপুরে ইউপি নির্বাচনের আগে অস্ত্রের মহড়া!
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনের আগে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মোটরসাইকেলে চড়ে মহড়া দিচ্ছে সন্ত্রাসীরা।
আওয়ামী লীগ মনোনীত ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীদের লোকজন এই মহড়া দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। তবে আওয়ামী লীগ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
urgentPhoto
এদিকে, রামগঞ্জের ইছাপুর ইউপিতে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী শহিদ উল্লাহর সমর্থকরা গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ইউনিয়নে বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. অলি উল্লাহর বাড়িতে ভাঙচুর চালায় এবং কয়েকটি গুলি করেছে। বিএনপির প্রচারকাজে থাকা মাইক ভাঙচুর করে রিকশাচালককে মারধর করা হয়।
এর প্রতিবাদ ও জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবিতে রাত ৮টার দিকে রামগঞ্জ উপজেলা বিএনপি ওই প্রার্থীর বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রামগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর ইব্রাহিম মজুমদার, ইছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল করিম স্বপন, ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জুয়েল ভূঁইয়া।
সংবাদ সম্মেলনে বহিরাগত অস্ত্রধারীদের ছবি ও ভিডিও ফুটেজ সাংবাদিকদের কাছে সরবরাহ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেন, আগামীকাল শনিবার অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখলে নিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে অবস্থান নিয়েছে। বিশেষ করে ইছাপুর ইউনিয়নে বহিরাগত ক্যাডারদের হাতে-হাতে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মোটরসাইকেলে মহড়া দিতে দেখা যাচ্ছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল এক নেতা জানিয়েছেন, বহিরাগত অস্ত্রধারীদের দিয়ে ভোটকেন্দ্র দখল করে পাঁচ ইউনিয়নেই আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের জয়ী করা হবে। এ জন্য প্রশাসনকে ম্যানেজ করার দায়িত্ব নিয়েছেন রামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল খায়ের পাটওয়ারী। এ লক্ষ্যে দুদিন ধরে তৎপরতা চালাচ্ছেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তৃতীয় ধাপে রামগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চনপুর, ইছাপুর, লামচর, চণ্ডিপুর ও করপাড়া ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বহিরাগতদের জড়ো করা হয়েছে। এ জন্য তিনদিন ধরে সন্ত্রাসীরা মহড়া দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ইছাপুরে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর এক মোটরসাইকেল মহড়ায় অংশগ্রহণকারীদের হাতে আস্ত্রেয়াস্ত্র দেখা গেছে। এ সময় তারা আওয়ামী লীগের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।
জানতে চাইলে রামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল খায়ের পাটওয়ারী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘নির্বাচনের সঙ্গে আমি সম্পৃক্ত নেই। প্রশাসনকে ম্যানেজ করার প্রশ্নই আসে না।’
সন্ত্রাসীদের মহড়া দেওয়া প্রসঙ্গে রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোতা মিয়া বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ সতর্ক রয়েছে। পাশাপাশি ম্যাজিস্ট্রেট, র্যাব, বিজিবিসহ কয়েক স্তরে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। অস্ত্রধারীদের মহড়ার বিষয়টি কেউ জানায়নি।’