রায়পুরে বৃদ্ধ বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেল ছেলের
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার পীর ফজলুল্লাহ ইসলামী মিশন দাখিল মাদ্রাসার নৈশপ্রহরী মো. আরিফ হোসেনকে (৪২) পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বৃদ্ধ বাবাকে প্রতিপক্ষ যুবকের হাতে মারধর ও টানাহেঁচড়া থেকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেছে তাঁর।
আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে রায়পুরের দক্ষিণ কেরোয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকাবাসী অভিযুক্ত মিথুন হোসেনকে (২৫) আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। মিথুনের বাড়িও একই গ্রামে।
নিহত আরিফের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দক্ষিণ কেরোয়া গ্রামের আনার উল্যা মৌলভী বাড়ির মোহাম্মদ আলী ছেরাংয়ের (৭০) সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে মিথুনদের জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। আজ বেলা ১১টার দিকে বিরোধপূর্ণ জমিতে মিথুন কাজ করতে যায়। এ সময় মোহাম্মদ আলী বাধা দেন। একপর্যায়ে মিথুন মোহাম্মদ আলীকে মারধর করে রাস্তার ওপর প্রকাশ্যে টানাহেঁচড়া করেন। খবর পেয়ে মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী আম্মতের নেছা ও ছেলে আরিফ ঘটনাস্থলে আসেন। এ সময় বাবাকে বাঁচাতে মিথুনের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন আরিফ। একপর্যায়ে মিথুন তাঁকে ঘুষি দেন। এতে ঘটনাস্থলেই আরিফ মারা যান। স্থানীয় লোকজন আহত অবস্থায় মোহাম্মদ আলীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহত আরিফের লাশ উদ্ধার করে। পরে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
নিহত আরিফের মা আম্মতের নেছা বলেন, ‘মিথুন আমার বৃদ্ধ স্বামীকে অন্যায়ভাবে মারধর করে মানুষের সামনে রাস্তার ওপর টানাহেঁচড়া করেছে। তাঁর চিৎকারে আমরা বাড়ি থেকে দৌঁড়ে এসে মিথুনকে শান্ত করতে পারিনি। একপর্যায়ে সে আমার ছেলের শার্টের কলার চেপে ধরে তাকে ঘুষি দেয়। এতে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।’
পুলিশ হেফাজতে অভিযুক্ত মিথুন হোসেন সংবাদকর্মীদের বলেন, ‘আমি আরিফের শার্টের কলার ধরে ধাক্কা দিয়েছি। এর কিছুক্ষণ পর তিনি মারা গেছেন।’
পীর ফজলুল্লাহ ইসলামী মিশন দাখিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শামছুল আলম বলেন, ‘প্রকাশ্যে বাবাকে পেটানোতে বাধা দিতে গেলে আরিফকেও মারধর করা হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা আমাদের জানিয়েছে। মারধরের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিচার দাবি করছি।’
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লোকমান হোসেন বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। থানায় অপরাধজনিত হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।