দরপত্র বিক্রি ৭৮টি, জমা পড়েছে ৩টি
বরগুনা জেলার গ্রাম পুলিশের পোশাক এবং সরঞ্জামাদি সরবরাহের ১৬ লাখ ৮০ হাজার টাকার কাজের দরপত্র প্রক্রিয়ায় সমঝোতার অভিযোগ উঠেছে। খোদ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ভবনেই এ সমঝোতা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় বলে অভিযোগ করেছেন কয়েকজন ঠিকাদার।
দরপত্র বিক্রয়ের শেষ দিন গতকাল বুধবার (২৭ এপ্রিল) পর্যন্ত সর্বমোট ৭৮টি দরপত্র বিক্রি হলেও আজ বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) জমাদানের শেষ তারিখে দরপত্র জমা পড়ে মাত্র তিনটি। জমা পড়া তিনটি দরপত্র সমঝোতাকারীদেরই বলে অভিযোগ করেন ঠিকাদাররা।
৭৮টি দরপত্র বিক্রি হলেও কেন মাত্র তিনটি দরপত্র জমা পড়ল এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার প্রমথ রঞ্জন ঘটক বলেন, ‘কতগুলো টেন্ডার বিক্রি হয়েছে না হয়েছে তা দেখার বিষয় নয়। আমরা টেন্ডার বক্স ওপেন করে মাত্র তিনটি দরপত্র পেয়েছি। বরগুনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও সংশ্লিষ্ট কমিটির প্রধান মো. নুরুজ্জামানের উপস্থিতিতে দরপত্র খোলা হয়েছে। এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি। আগামী সপ্তাহে সভার মাধ্যমে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. নূরুজ্জামান বলেন, ‘দরপত্র খোলার দিনে আমরা তিনটি দরপত্র পেয়েছি। সমঝোতা যদি বাইরে হয়ে থাকে সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. মহা. বশিরুল আলমের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি একটি সভায় ব্যস্ত রয়েছেন বলে জানান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র জানায়, দীর্ঘ ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সংশ্লিষ্ট দপ্তর এবং সরকারদলীয় ঠিকাদারদের সমন্বয়ে সমঝোতার মাধ্যমে বরিশালের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কাজ বাস্তবায়ন করে আসছে। ফলে কোনো বছরই স্থানীয় সাধারণ ঠিকাদাররা এ কাজের দরপত্র প্রক্রিয়ায় যথাযথভাবে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। এ বছরও দরপত্র বিক্রির শুরু থেকেই দরপত্র কিনতে পারেননি সাধারণ ঠিকাদাররা। যাঁরাই কিনেছেন তাঁদের সবার কাছ থেকেই দরপত্র নিয়ে যায় প্রভাবশালী ওই ঠিকাদারচক্র।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দরপত্র জমাদানের শেষ তারিখ আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই স্থানীয় সরকার শাখায় অবস্থান নেন সরকারদলীয় একাধিক ঠিকাদার।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ঠিকাদার জানান, টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাঝেই ছিল অস্বচ্ছতা। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে টানানো টেন্ডার বিজ্ঞপ্তিতে সব কিছু ছাপানো অক্ষরে লেখা থাকলেও দরপত্র বিক্রি, জমাদান ও খোলার তারিখ ছিল হাতে লেখা।
ভুক্তভোগী ওই ঠিকাদার বলেন, ‘এটা তো দুধের শিশুর কাছেও স্পষ্ট যে, ৭৮টি দরপত্রের মধ্যে মাত্র তিনটি দরপত্র জমা পড়ল কেন?’