নিখোঁজ হওয়ার ১৯ দিন পর মিলল নারীর লাশ
নিখোঁজের ১৯ দিন পর সঙ্গীতশিল্পী প্রমিতের মা কমলা রাণী বাড়ৈর (৬০) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার রাধানগর গ্রাম থেকে কমলা রাণীর লাশ উদ্ধার করে ডিবি।
রাধানগর গ্রামের মাজার রোডের বৈরাংগী বিলের একটি কালভার্টের নিচের মাটিতে পোতা ছিল কমলার লাশ। সঙ্গীতশিল্পী প্রমিত ও তাঁর মা নরসিংদীর পলাশ উপজেলার পণ্ডিতপাড়ার বাসিন্দা। ‘টুনির মা’ শিরোনামে একটি গান গেয়ে প্রমিত জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
এই ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। আটককৃতরা হচ্ছেন, রাধানগর গ্রামের অস্থায়ী বাসিন্দা রিপন চন্দ্র (২৫) ও আনন্দ মণ্ডল(২৮)। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক আবদুল গাফফার জানিয়েছেন, আটক ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, তাঁরা স্বর্ণালংকারের লোভে কমলাকে হত্যা করেছেন। আটক ব্যক্তিদের তথ্য অনুযায়ী কমলার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
লাশ উত্তোলনের সময় জেলা পুলিশ সুপার, ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এ ব্যাপারে রায়পুরা থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৯ এপ্রিল রায়পুরা উপজেলার রাধানগর গ্রামে নিজের মেয়ে দীপালি রাণী বিশ্বাসের বাড়িতে বেড়াতে যান কমলা রাণী বাড়ৈ। সকালের দিকে কমলা রাণীকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে চারদিকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। খবর দেওয়া হয় প্রমিতসহ অন্য স্বজনদের।
পুলিশ আরো জানায়, মাকে কোথাও না পেয়ে গত ১৬ এপ্রিল পলাশ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন সঙ্গীতশিল্পী প্রমিত। জেলা পুলিশ সুপার আমেনা বেগম জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও রায়পুরা থানার পুলিশকে দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দেন। রায়পুরা থানা পুলিশ ঘটনার পর থেকে কমলার মেয়ে দীপালির প্রতিবেশী রিপন চন্দ্র ও আনন্দ মণ্ডলকে আটক করে। আটক ব্যক্তিদের অধিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে পাঠানো হয়। ডিবির উপপরিদর্শক আবদুল গাফফারের জিজ্ঞাসাবাদে বের হয়ে আসে কমলা রাণীর নিখোঁজের আসল রহস্য।
তদন্ত কর্মকর্তা আবদুল গাফফার জানান, আটক রিপন ও আনন্দ জানিয়েছেন, গভীর রাতে ঘরে ঢুকে কমলা রাণীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তাঁরা। হত্যার পর কমলার স্বর্ণালংকার লুট করে লাশ কালভার্টের নিচে ফেলে রাখা হয়।
জেলা পুলিশ সুপার আমেনা বেগম জানান, বেশ কয়েক দিন ধরে সংগীতশিল্পী প্রমিতের মায়ের সন্ধান পাওয়ার জন্য জেলা পুলিশ তদন্ত করে যাচ্ছিল। তদন্তের একপর্যায়ে প্রমিতের বোনের বাড়ির পাশের বাড়ির দুই ব্যক্তিকে সন্দেহমূলক আটক করা হয়। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার রহস্য বের হয়ে আসে।