বান্দরবানে দায়িত্ব নিয়েছে পুনর্গঠিত পার্বত্য জেলা পরিষদ
বান্দরবানে পুনর্গঠিত পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সদস্যরা দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। আজ রোববার দুপুরে পরিষদের সভাকক্ষে নিয়োগপত্রে সই করার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নেন তাঁরা।
এ সময় জেলা পরিষদের তৃতীয়বারের মতো মনোনীত চেয়ারম্যান ক্যশৈ হ্লা বলেন, সেবার মানসিকতা নিয়ে জনগণের সেবক হিসেবে সবাইকে কাজ করতে হবে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার বিষয়টি মাথায় রেখে নিয়মতান্ত্রিকভাবেই দায়িত্ব পালন করতে হবে। তিনি বলেন, সরকার পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নে অত্যন্ত আন্তরিক। সরকারের উন্নয়নের চাকা সচল রাখতে পার্বত্য জেলা পরিষদের পরিসর বাড়ানো হয়েছে। বিভিন্ন উপজেলা এবং সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হয়েছে পরিষদে। সেই সঙ্গে জনগণ এবং দলের প্রতিশ্রুতিগুলোও মনে রাখতে হবে।
ক্যশৈ হ্লার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বান্দরবান ৬৯ সেনা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নকীব আহম্মেদ চৌধুরী, ডিজিএফআইয়ের জেলা অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল শফিউল আজম ইমানী, জেলা প্রশাসক মিজানুল হক চৌধুরী, জেলা পুলিশ সুপার দেবদাস ভট্টাচার্য, জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা, সদর উপজেলার চেয়ারম্যান আবদুল কুদ্দুছ, পৌর মেয়র মোহাম্মদ জাবেদ রেজা, জেলা পরিষদের সদস্য কাজী মুজিবর রহমান, টিংটিং ম্যা মারমা, ফাতেমা পারুলসহ পরিষদের সদস্যরা বক্তব্য রাখেন।
পুনর্গঠিত জেলা পরিষদের ১৪ সদস্য হলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মুজিবর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক লক্ষ্মীপদ দাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক ক্যসা প্রু মারমা, রোয়াংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাঞ্চন জয় তঞ্চঙ্গ্যা, লামা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, রুমা আওয়ামী লীগের সভাপতি জুয়েল বম, আলীকদমের থোয়াই চাহ্লা মারমা, থানচির থোয়াই হ্লামং মারমা, লেখক ও গবেষক সিংইয়ং ম্রো, ফিলিপ ত্রিপুরা, ক্যাউচিং চাক, ম্রাসা খেয়াং, লামা উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা পারুল এবং টিংটিং মে মারমা।
প্রসঙ্গত, পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে তিন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে ৩৪ সদস্যবিশিষ্ট জেলা পরিষদ গঠনে ১৯৮৯ সালে আইন করা হয়। এ নিয়মে পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠনের পর শুধু প্রথম দফায় একবার নির্বাচন হয়েছিল। পরবর্তীকালে শীর্ষ পর্যায়ের একজন আদিবাসী নেতার আপত্তির কারণে আর নির্বাচন হয়নি। তবে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ৩৪ সদস্যবিশিষ্ট পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ বাতিল করা হয়। পরিষদ সংক্রান্ত আইনের অপর একটি ধারার ক্ষমতাবলে চেয়ারম্যানসহ পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি অন্তর্বর্তীকালীন জেলা পরিষদ গঠন করে দেওয়া হয়। ১৯৯৭ সাল থেকে তারই ধারাবাহিকতায় ক্ষমতাসীন সরকারের দলীয় নেতাদের নিয়ে পুনর্গঠন কিংবা মেয়াদকাল বৃদ্ধির মাধ্যমে এতদিন পরিষদগুলো পরিচালিত হয়ে আসছিল।
পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গত ২৫ মার্চ জারি করা নতুন এক আদেশে পূর্ববর্তী জেলা পরিষদগুলো ভেঙে দিয়ে চেয়ারম্যানসহ ১৫ সদস্যের পার্বত্য জেলা পরিষদ নতুনভাবে পুনর্গঠন করা হয়।