পুরোনো খাতা বিক্রির ট্রাকে ৫ হাজারেরও বেশি পাঠ্যবই!
রায়পুরা উপজেলায় সেরাজনগর এম এ পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের গেট থেকে ট্রাক ভর্তি পাঠ্যবই উদ্ধার করা হয়। ছবি : এনটিভি
নরসিংদীতে একটি বিদ্যালয়ে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য সরকারের পাঠ্যবইসহ একটি ট্রাক আটক করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। ওই ট্রাকে বিভিন্ন শ্রেণি ও বর্ষের পাঁচ হাজারেরও বেশি পাঠ্যবই ছিল। ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, পুরানো খাতা বিক্রি করা হচ্ছে, এর সঙ্গে ভুলে পাঁচ-ছয়টি বই চলে যায়।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় সেরাজনগর এম এ পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিকে অবহিত না করেই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. মোক্তার হোসেন একক ক্ষমতা বলে চলতি বছরসহ বিগত কয়েক বছরের পাঁচ সহস্রাধিক বই রাতের আঁধারে ট্রাকে তুলেছিলেন। বিভিন্ন শ্রেণির বই ছিল সেখানে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সোমবার বিকেল থেকে বিদ্যালয়ের গোডাউন থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের বস্তা ভর্তি বিভিন্ন শ্রেণীর সরকারি পাঠ্যবই ট্রাক বোঝাই হচ্ছিল। পরে ট্রাকটি বিদ্যালয় ত্যাগ করার সময় তা আটক করে স্থানীয় বাসিন্দারা।
খবর পেয়ে বিদ্যালয়ে ছুটে আসেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নার্গিস সুলতানা, বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য মাহবুব আলম শাহীনসহ অন্যরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের তোপের মুখে ট্রাক থেকে সব বস্তা খুলে দেখা যায় বস্তায়, ২০১৪-১৫ ও ২০১৬ সালের পাঠ্যবই আছে। পরে সবার উপস্থিতিতে বইগুলো আবার বিদ্যালয়ের গোডাউনে রেখে গোডাউনটি সিলগালা করে দেন শিক্ষা কর্মকর্তা নার্গিস সুলতানা।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. মোক্তার হোসেন জানান, বিষয়টি স্বাভাবিক। তিনি বলেন, ‘পুরাতন কিছু খাতা বিক্রি করেছি। তবে ভুলক্রমে পাঁচ-ছয়টা বই ট্রাকে উঠতেই পারে।’
গোডাউনের দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষক মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পুরাতন খাতার সঙ্গে যখন শ্রমিকরা ট্রাকে বই তুলছিল তখনই আমি প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি অবহিত করি এবং প্রতিবাদ জানাই। কিন্তু স্যার আমার কথায় গুরুত্ব দেননি।’
বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. মাহবুব আলম শাহীন জানিয়েছেন, ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নারগিস সুলতানা বলেন, ‘সরকারি পাঠ্যবই বিক্রির নিয়ম নেই। তবে বিতরণের পর মজুদ থাকলে নিতিমালা অনুযায়ী সাব-কমিটির মাধ্যমে বিক্রি করে তা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে।’