নরসিংদীতে ডিবি হেফাজতে যুবকের মৃত্যু
নরসিংদীতে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) হেফাজতে দীন ইসলাম (২৫) নামের এক যুবককের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দাবি করা টাকা না দেওয়ায় তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর স্বজনরা।
পুলিশের দাবি, নিহত যুবক একাধিক ডাকাতি ও হত্যার সঙ্গে জড়িত। গ্রেপ্তারের সময় পালাতে গিয়ে গণপিটুনিতে আহত হয়ে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গণধোলাইয়ের পর যুবককে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নেওয়া হলে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহত দীন ইসলামের বাড়ি শহরের ভেলানগর এলাকা। তিনি নরসিংদীর কেকেএম বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের টিফিন সরবরাহকারীর কাজ করতেন।
পুলিশ জানিয়েছে, শহরের বিলাসদী এলাকায় একটি বাসায় ডাকাতির ঘটনায় বৃহস্পতিবার ভোরে তাকে আটক করার সময় তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় আশপাশের মানুষ তাকে ধরে গণপিটুনি দেয়। পরে জনগণ তাঁকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
পুলিশ জানায়, শহরের বিলাসদী এলাকায় একটি বাসায় ডাকাতির ঘটনায় তাকে আটক করার সময় তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয় জনতা। পরে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। জ্ঞান হারানোর পর তাকে দ্রুত জেলা হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ভোরে ফজরের নামাজের পর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল দীন ইসলামের বাড়িতে যায়। তাঁরা দীন ইসলামকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে আসে। কিন্তু স্বজনরা জেলা গোয়েন্দা পুলিশে দীন ইসলামের খোঁজ করতে গিয়ে তার স্বাক্ষাৎ পায়নি। পরে দুপুরে স্বজনরা খবর পায় দীন ইসলাম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, দীন ইসলামের মৃত্যুকে ঘিরে স্বজনদের পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক পুলিশ হাসপাতালে অবস্থান নিয়েছে। ছেলের মৃত্যুর খবর মা সাবিহা বেগম বুক চাপড়ে আর্তনাদ করছে। তার সঙ্গে কাঁদছে স্বজনরা। কিন্তু স্বজনরা লাশ দেখতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।
সাংবাদিকদের কাছে নিহতের মা সাবিহা বেগম বলেন, ‘গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল কথা বলার জন্য দীন ইসলামের সাথে দেখা করতে চায়। আমি তাকে ঘুম থেকে ডেঁকে দিয়েছি। কিন্তু তাঁকে ধরে নেওয়ার সময় কারণ জানতে চাইলে পুলিশ জানায়, টাকা নিয়ে আস, না হলে রাইফেল দিয়ে গুলি করব। পরে বেলা আড়াইটার দিকে খবর পাই, আমার ছেলে মারা গেছে।’
নিহতের চাচি পিয়ারা বেগম বলেন, ‘দীন ইসলামকে ধরে নেওয়ার সময় ডিবি সদস্যরা বলেছে, পাঁচ লাখ টাকা দিলে তাকে ছেড়ে দেব। তাকে নির্যাতন করে পুলিশ মাইর্যা ফেলাইছে। আমরা এই হত্যার বিচার চাই।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, নিহত দীন ইসলাম শিবপুরের বাপ্পী হত্যাসহ একাধিক ডাকাতি মামলার আসামি।