কাঁচিকাটায় জামানত হারালেন নৌকার প্রার্থী
নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার কাঁচিকাটা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রতীকের প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ায় এবং ইউনিয়নবাসীর প্রত্যাশিত ব্যক্তিকে মনোনয়ন না দেওয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানান নেতা-কর্মীরা।
কাঁচিকাটা ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জয় পেয়েছেন আনারস প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মোবারক হোসেন কনক। দ্বিতীয় হয়েছেন চশমা প্রতীক নিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান।
নিয়ম অনুযায়ী প্রদত্ত মোট ভোটের ৮ শতাংশের কম পেলে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। ইউপি নির্বাচনে মনোহরদীর (চালাকচর, শুকুন্দি, কাঁচিকাটা) রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, কাঁচিকাটা ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ছয়জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। মোট ভোটার ১৬ হাজার ৮৪০। ভোট পড়েছে ১২ হাজার ৬০৫টি। আওয়ামী লীগের প্রার্থী সামসুন নাহার এ্যামিলি পেয়েছেন ৫২১ ভোট। তাই তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
কাঁচিকাটায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. মোবারক হোসেন (আনারস) পাঁচ হাজার ২৩৮ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাছান (চশমা) পেয়েছেন প্রায় চার হাজার ভোট। বিএনপির প্রার্থী (ধানের শীষ) খোরশেদ আলম পেয়েছেন এক হাজার ২৩৫ ভোট। ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম (হাতপাখা) ৭৯৩ ভোট পেয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী সামসুন নাহার (নৌকা) ৫২১ ভোট পেয়ে পঞ্চম হয়েছেন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী সামসুজ্জামান (ঘোড়া) ৪৩৫ ভোট পেয়েছেন।
কাঁচিকাটা ইউনিয়নের লোকজন জানায়, প্রশাসন এই ইউনিয়নে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করায় মানুষ তাদের পছন্দ মতো ভোট দিতে পেরেছে। নৌকার প্রার্থী এলাকায় জনপ্রিয় নয় তাই তিনি ভোট পাননি। বিজয়ী চেয়ারম্যান মোবারক হোসেন কনকের বাবা এই ইউনিয়নে দীর্ঘ দিন চেয়ারম্যান ছিলেন। সেই সুবাধে এলাকায় তাঁর ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। অন্যদিকে মেহেদী হাছান রহিম বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। উপজেলা নেতৃত্ব তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে সামসুন নাহারকে মনোনয়ন দেয়। এতে আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন পর্যায়ে নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সেই ক্ষোভের প্রতিফলন ঘটেছে ৪ জুনের নির্বাচনে।
মোবারক হোসেন কনক বলেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হলেও স্থানীয় নির্বাচনে ভোটাররা তাঁদের পছন্দের ব্যক্তিকে নির্বাচিত করবে এটাই স্বাভাবিক। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট হওয়ায় মানুষ তাদের পছন্দ মতো প্রতিনিধি বাছাই করতে পেরেছে। নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ায় নরসিংদী জেলা প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে ইউনিয়নবাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
নির্বাচনে জামানত হারানোর কারণ জানতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সামসুন নাহারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।