মন্ত্রীদের কাছে বিচার চাইলেন আনন্দ গোপালের স্ত্রী
সরকারের তিন মন্ত্রীর কাছে পুরোহিত স্বামী আনন্দ গোপাল গাঙ্গুলী (৬৫) হত্যার বিচার চেয়েছেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার করাতিপাড়া গ্রামের শেফালী গাঙ্গুলী।
গতকাল মঙ্গলবার সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন আনন্দ গোপালের বাড়িতে যান। ওই সময় স্বামী হত্যার বিচার চান শেফালী।
তিন মন্ত্রী আনন্দ গোপালের পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেন এবং নির্মম এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের আশ্বাস দেন।
গত ৭ জুন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মহিষাডাঙ্গা ভাগাড় এলাকায় আনন্দ গোপাল গাঙ্গুলীকে গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার কিংবা আটক করা যায়নি বলে জানিয়েছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান হাফিজুর রহমান।
মন্ত্রীরা আনন্দ গোপাল গাঙ্গুলীর বাড়ি পরিদর্শন শেষে দুপুর ২টার দিকে ঝিনাইদহের করাতিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এক প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেন।
সেই সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পিছু হটে গেলেও আত্মসমর্পণ করেননি। আগুন যুদ্ধের ব্যর্থতার পরে নতুন কৌশল হচ্ছে গুপ্তহত্যা।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইরফান বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন ১৪ দলের সমন্বয়ক ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) কেন্দ্রীয় সভাপতি অ্যাডভোকেট এনামুল, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি নিমচন্দ্র ভৌমিক।
ওই সময় আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই, ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাংসদ আনোয়ারুল আজিম, ঝিনাইদহ-৩ আসনের সাংসদ নবী নেওয়াজ, সাবেক সাংসদ নূরজাহান বেগম, জেলা পূজা উদযাপন কমিটির নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাশ প্রমুখ।
সমাবেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, খালেদা জিয়া ২০১৪ সালের নির্বাচন ঠেকাতে পারেননি। এখন ২০১৯ সালের একদিন আগেও জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে না। এ সময় তিনি পুরোহিত আনন্দ গোপালসহ দেশব্যাপী সব গুপ্তহত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেওয়া হবে বলে দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সমাবেশে রাশেদ খান মেনন বলেন, সন্ত্রাসবাদ কোনো রাষ্ট্রধর্ম মানে না। বিশেষ কোনো সম্প্রদায় নয়, বাংলাদেশের উগ্র জঙ্গিবাদের আক্রমণে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান মুসলিম নিহত হচ্ছে। তিনি উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘এসব ঘটনায় সরকারের ওপর থেকে আস্থা হারাবেন না।’
বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে হেলিকপ্টারযোগে সরকারের তিন মন্ত্রীসহ ১৪ দলের নেতারা রাজধানীর উদ্দেশে ঝিনাইদহ ছাড়েন।