১৪ জনের লাশ হস্তান্তর
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণে হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ২৫ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১৪ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে, তাঁদের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১টায় ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা পৌর সদরের কৈডুবী নামক জায়গায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। হতাহতদের বেশির ভাগের বাড়ি পটুয়াখালী ও বরিশাল এলাকায় বলে জানা গেছে।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে যাঁদের পরিচয় পাওয়া গেছে তাঁরা হলেন আকলিমা আক্তার, শফিকুল ইসলাম, আসমা বেগম, আমেনা বেগম, হেলাল, রাবেয়া বেগম, টুটুল, আফজাল হোসেন, সূর্য বেগম, রেজাউল ইসলাম, শাহীন, মনিরুল ইসলাম, হাসনা বেগম ও রোজিনা বেগম।
স্থানীয় সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন, জেলা প্রশাসক সরদার সরাফত আলী ও পুলিশ সুপার জামিল হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছে। আহত যাত্রীদের চিকিৎসার সব ব্যয়ভার জেলা প্রশাসন বহন করবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক সরদার সরাফত আলী।
দুর্ঘটনার বিষয়টি তদন্তের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট মো. বজলুর রশিদকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে বাসটির চালকের সহকারী, শিশু ও নারী রয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত সোনারতরী পরিবহনের বাসটি ঢাকার গাবতলী থেকে পটুয়াখালী যাচ্ছিল। আহত যাত্রীদের কয়েকজন জানিয়েছেন, সাকুরা পরিবহনের একটি বাসকে ওভারটেক করতে গিয়েই এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই চালক পালিয়ে গেছে।
স্থানীয় লোকজন, ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার পুলিশ ও ভাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তিন ঘণ্টা ধরে হতাহতদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি করেন। উদ্ধার অভিযান চলার সময় রাস্তার দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে।
হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হোসেইন সরকার জানান, ঢাকা থেকে বরিশালের উদ্দেশে ছেড়ে আসা সোনারতরী পরিবহনের বাসটির চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এ সময় বাসটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে বাসটি দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায় এবং দুমড়েমুচড়ে যায়। আহত যাত্রীদের চিৎকারে স্থানীয় বাসিন্দারা এগিয়ে আসেন। এর পর তাঁরা পুলিশে খবর দেন। উদ্ধারকারীরা বাসটির ভেতর থেকে ১৯টি মৃতদেহ উদ্ধার করেন। গুরুতর আহত ২৬ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে মারা যান আরো ছয়জন।
আহতদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।