শিশু সনুকে ভারতীয় হাইকমিশনে হস্তান্তর
ভারতীয় হাইকমিশনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ওই দেশেরই শিশু অভিরূপ সনুকে (১১)। আজ মঙ্গলবার বরগুনার আদালত ভারতীয় হাইকমিশনের প্রথম সচিব রমাকান্ত গুপ্তের কাছে তুলে দেন সনুকে। হাইকমিশনের মাধ্যমেই সনু ভারতে তার মা ও বাবার কাছে ফিরে যাবে।
চার বছর পর নিজ দেশে ফিরে যাচ্ছে সনু। ২০১০ সালে পাচারের শিকার হয়ে ভারতের নয়াদিল্লি থেকে বরগুনার বেতাগী উপজেলার গেরামর্দন গ্রামে চলে আসে সনু।
আজ মঙ্গলবার বিকেলেই সনুকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে বরগুনা ত্যাগ করেছেন ভারতীয় হাইকমিশনের প্রথম সচিব রমাকান্ত গুপ্ত। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন সনুকে উদ্ধারকারী জামাল বিন মুছা।
এর আগে গতকাল সোমবার ভারতীয় হাইকমিশনের পক্ষে প্রথম সচিব রমাকান্ত গুপ্ত বরগুনার শিশু আদালতে সনুকে তার বাবা-মায়ের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ভারতীয় হাইকমিশনের জিম্মায় নেওয়ার আবেদন করেন। আবেদনের শুনানির পর বিচারক মুহা. আবু তাহের প্রথমে পাঁচ লাখ টাকা জামানত দিয়ে সনুকে ভারতীয় হাইকমিশনের প্রথম সচিব রমাকান্ত গুপ্তের জিম্মায় দেওয়ার আদেশ দেন। এ সময় ভারতীয় দূতাবাসের প্রথম সচিব জামানত দিয়ে শিশু সনুকে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে আদেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন করলে পরবর্তীতে বিচারক জামানতের অর্থ এক লাখ টাকা নির্ধারণ করেন। এতেও আপত্তি জানালে বিচারক নিরপরাধ শিশুটির মানবিক বিষয় বিবেচনা করে এবং ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের জন্য কোনো জামানত ছাড়াই সনুকে ভারতীয় হাইকমিশনের জিম্মায় দেওয়ার আদেশ দেন।
বিদায় বেলায় বরগুনার আদালত প্রাঙ্গণে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন জামাল বিন মুছা। এ সময় তিনি সনুকে জড়িয়ে কেঁদে ফেলেন। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ভারত-বাংলাদেশের দুই দেশের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ ভারতীয় হাইকমিশন ও বরগুনার আদালতের প্রতি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকায় ফিরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কবে কখন সনুর বাবা-মায়ের উদ্দেশে ভারতে রওনা হবে সনু।
২০১০ সালেই সনুকে উদ্ধার করার পর সনুর নাম-পরিচয় খুঁজতে থাকেন মুছা। সবশেষে চলতি বছর মে মাসে নিজ খরচে জামাল বিন মুসা ভারতের নয়াদিল্লির পথে পথে ঘুরে দিল্লির দিলশাদ গার্ডেন এলাকায় সনুর বাবা-মাকে খুঁজে পান। একটি অপহৃত শিশুর জন্য জামাল ইবনে মুসার এ মানবিক প্রচেষ্টা নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বিষয়টি জেনে দুই দেশের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরপ্রধানরা সনুকে তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতে দ্রুততার সঙ্গে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।