বুয়েট শিক্ষককে মারধর, কর্মবিরতিতে শিক্ষকরা
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামায়াতে ইসলামী নেতা কামারুজ্জামানের ফাঁসির ঘটনায় এক ফেসবুক মন্তব্যের জের ধরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক শিক্ষককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। তবে ছাত্রলীগ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। আজ রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দ্রুত শাস্তির দাবি জানিয়ে আজ থেকে আগামী শনিবার পর্যন্ত কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ১টায় বিভাগীয় অফিসে অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম বসে ছিলেন। এ সময় বুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি শুভ্র জ্যোতি টিকাদার ও সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ কনকের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন নেতাকর্মী ওই শিক্ষককে কক্ষ থেকে বের করে মারধর করতে থাকে। এতে জাহাঙ্গীর আলমের নাক ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাঁকে টানতে টানতে ক্যাফেটেরিয়ার ভেতরে নিয়ে যায়।
খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাফেটেরিয়া থেকে অধ্যাপক জাহাঙ্গীরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ সময় বুয়েটের অন্যান্য শিক্ষক এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা জাহাঙ্গীরের পক্ষ নিয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ে জড়ো হয়। এতে ছাত্রলীগের একটি অংশও যোগ দেয় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
ঘটনার পর বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি এক জরুরি বৈঠক ডাকেন। এতে শিক্ষকরা দোষীদের দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে এক সপ্তাহের কর্মবিরতির ঘোষণা দেন।
এ ঘটনাকে ‘লজ্জাজনক’ আখ্যা দিয়ে বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক খালেদা ইকরাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাঁরা প্রতিবেদন দেবেন। প্রতিবেদন অনুয়ায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তবে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ কনক। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘মারধরের প্রথম পর্যায়ে আমি ও সভাপতি ছিলাম না। মারধরের কিছুক্ষণ পরে জানতে পেরে আমি ঘটনাস্থলে এসে দেখি স্যারের শারীরিক অবস্থা খারাপ। তাড়াতাড়ি করে তাঁকে মেডিকেলে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। যেহেতু তিনি গতকালের রায় কার্যকর নিয়ে বাজে মন্তব্য করেছেন, তাই বুয়েট ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।’