বিসু উৎসবে নাচে-গানে মাতল বান্দরবান
বান্দরবানের পাহাড়ে শুরু হয়েছে তঞ্চঙ্গ্যা আদিবাসীদের বিসু উৎসব। গতকাল রোববার বিকেলে উৎসবের অংশ হিসেবে বান্দরবান ও রাঙামাটি জেলার তরুণ-তরুণীরা ২৪টি দলে বিভক্ত হয়ে ঐতিহ্যবাহী ঘিলা খেলায় অংশ নেয়। এ ছাড়া তঞ্চঙ্গ্যা তরুণ-তরুণীরা নাচে-গানে মাতান উৎসবের মাঠ।
বান্দরবানে সদর উপজেলার রেইছা সিনিয়রপাড়ায় তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের বিসু উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর। তিনি তরুণ-তরুণীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মিজানুল হক চৌধুরী, তঞ্চঙ্গ্যা কল্যাণ সংস্থার সভাপতি প্রসন্ন কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা, পুলিশ সুপার দেবদাস ভট্টাচার্য, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য কাঞ্চন জয় তঞ্চঙ্গ্যা প্রমুখ।
তঞ্চঙ্গ্যা আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী ঘিলা খেলা প্রসঙ্গে আয়োজক কমিটির সদস্যসচিব মুক্তাধন তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ঘিলা হচ্ছে জংলি লতায় জন্মানো এক ধরনের বীজ বা গোটা। তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের বিশ্বাস, ঘিলার লতায় ফুল থেকে বীজ জন্মালেও স্বর্গীয় ঘিলা ফুলের দেখা সাধারণ মানুষ পান না। এই বীজকে পবিত্র মনে করে সংগ্রহে রাখেন তঞ্চঙ্গ্যারা। ঘিলা বাড়িতে রাখলে বজ্রপাত, বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় এবং অপদেবতা বাড়িতে ঢুকতে পারে না বলে বিশ্বাস করেন তাঁরা। পবিত্র এই ফুল থেকে সংগ্রহ করা বীজ দিয়ে অনুষ্ঠিত এক ধরনের খেলাকে বলা হয় ঘিলা খেলা।
বান্দরবানসহ তিন পার্বত্য জেলায় বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণের উৎসবের নাম বৈসাবি। এ উৎসবকে ত্রিপুরাদের ভাষায় বৈসুক, মারমাদের ভাষায় সাংগ্রাই, চাকমাদের ভাষায় বিজু, অহমিয়াদের ভাষায় বিহু, তঞ্চঙ্গ্যাদের ভাষায় বিসু নামে ডাকা হয়। এর মধ্যে বৈসুকের ‘বৈ’, সাংগ্রাইয়ের ‘সা’ ও বিজু, বিষু, ও বিহুর ‘বি’ নিয়ে উৎসবটিকে সংক্ষেপে ‘বৈসাবি’ নামে পালন করা হয়। পার্বত্য শান্তিচুক্তি সম্পাদনের পর থেকে পাহাড়ের সব জনগোষ্ঠীকে একসঙ্গে উৎসবে সম্মিলিত করার জন্য এ নাম প্রচলন করা হয়।