সোহাগপুর বিধবাপল্লীতে গণজাগরণ মঞ্চের পহেলা বৈশাখ
একটু ভিন্ন আঙ্গিকে এবার পহেলা বৈশাখ উদযাপন করল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে শাহবাগে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চ। মাত্র তিনদিন আগেই একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসি হওয়া জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের এলাকা শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সোহাগপুরের বিধবাদের সাথে এবার নববর্ষ উদযাপন করেছে গণজাগরণ মঞ্চ।
‘সোহাগপুর গণহত্যার’ কারণেই কামারুজ্জামানের ফাঁসির দণ্ড হয়। মুক্তিযুদ্ধকালে ওই গ্রামের ১৬০ জন পুরুষকে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনার দিন থেকে সোহাগপুর গ্রাম ‘বিধবাপল্লী’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠে।
পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী গণজাগরণ মঞ্চ সেই বিধবাদের সাথেই নতুন বছরের প্রথম দিনটি কাটিয়েছে। বিধবাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় উপহারসামগ্রী আর নগদ টাকা। এ সময় মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার মুক্তিযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত এ ধরনের গ্রামগুলোতে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করে ‘মডেল গ্রাম’ হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে গণজাগরণ মঞ্চের নেতাকর্মীরা ঢাকা থেকে সোহাগপুর বিধবাপল্লীতে পৌঁছান। এ সময় তাঁদের সাথে যোগ দেন শেরপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জেলা কমান্ডার নুরুল ইসলাম হীরুসহ জেলার মুক্তিযোদ্ধা নেতাসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।
ইমরান এইচ সরকারের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা প্রথমেই সেখানে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর শহীদদের স্ত্রীদের ফুল ও শাড়ি উপহার দেওয়া হয় গণজাগরণ মঞ্চের পক্ষ থেকে। এ সময় শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ দুলাল হোসেন ৩২ জন শহীদের স্ত্রীর হাতে এক হাজার করে টাকা তুলে দেন।
পরে ডা. ইমরান এইচ সরকার সাংবাদিকদের কাছে এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘এই সোহাগপুরের প্রত্যেকটা জায়গা রক্তাক্ত এবং এই এলাকার মানুষ রক্ত দিয়ে কিন্তু এই দেশটা স্বাধীন করেছে।
গণজাগরণ মঞ্চ এখানে আগেই আসতে চেয়েছিল। এই গ্রামের ইতিহাসের সাথে আমাদের সম্পর্ক আছে। এই গ্রামের গণহত্যার ন্যায়বিচার আমরা পেয়েছি। তাই যুদ্ধাপরাধীদের ন্যায়বিচারের আত্মতৃপ্তি ও নতুন বছরের আনন্দ আমরা এই গ্রামের মানুষের সাথে ভাগাভাগি করে নিয়েছি।’
এ সময় ইমরান এইচ সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মধ্য দিয়ে যেসব জেলা কলঙ্কমুক্ত হয়েছে, সেসব জেলাকে বৈষম্যহীন, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও অসাম্প্রদায়িক ‘মডেল জেলা’ এবং ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোকে ‘মডেল গ্রাম’ হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানান।